সারাদেশ
  রামগঞ্জে অগ্নিঝুঁকিতে জিয়া শপিং মার্কেট
  30-03-2024

রামগঞ্জে জিয়া শপিং কমপ্লেক্স মার্কেট অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। মার্কেটের নকশা বহির্ভূত সিড়ি, গেট ও পার্কিং স্থানে দোকান নির্মান, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা জরাজীর্ণ ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করেছেন সচেতনমহল। উপজেলা মাসিক সভায় বিষয়টি কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের তাগিদ দেন তাঁরা। পৌরসভার কাউন্সিলার মেহেদেী হাসান শুভ তত্ত্বাবধানে এসব দোকান নির্মান করা হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মার্কেট ব্যবসায়ী ও নির্মান শ্রমিকরা।
মার্কেটের ব্যবসায়ী ও সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের অর্থায়নে ডাক বাংলা নামক পুকুর ভরাট করে ২০০৩ সালে ৩ তলা বিশিষ্ট মার্কেটি নির্মান করা হয়। নকশা অনুযায়ী মার্কেটের ১ম তলায় ৮৬টি ও ২য় ৮৬টি দোকান এবং ৩য় তলায় অডিটিরিয়াম নির্মান করা হয়। মার্কেটের বাউন্ডারি ওয়াল, পার্কিং ব্যবস্থা, সিড়ি ও গেটের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়। ২০২১ সালে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় কয়েকজন রাজনীতিক নেতা মিলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ও নকশা বহির্ভূত মার্কেটের ৩য় তলার অডিটিরিয়াম ভেঙ্গে ৮৬টি দোকান নির্মান করেন। পরে জেলা পরিষদে নামমাত্র মূল্যে বরাদ্ধ নিয়ে, প্রতিটি দোকান ২০ থেকে ৩০ লাখ করে বিক্রি করে অনৈতিক সুবিধা আদায় সুবিধা আদায় করে। ২০২৩সালে মর্কেটের টয়লেট, সিড়ি ও ৩টি গেট বন্ধ করে ৭টি দোকান নির্মান করেন। পরে তা বিক্রি করে দেন। বর্তমানে মার্কেটের বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে ও পার্কিং দখল করে আরো ২৫টি দোকান নির্মানাধিন রয়েছে।
বুধবার(২৭মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটির ৩টি গেট ছাড়া প্রবেশ ও বাহির হওয়ার ব্যবস্থা নেই। অন্ধকারাচ্ছন্ন ও অতিরিক্তি তাপপ্রবাহ। বিদ্যুৎ সংযোগগুলো জরাজীর্ণ । মার্কেটের কোথাও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই। বাহিরে পাকিং স্থানে ও বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে দোকান নির্মানের কাজ চলছে।
মার্কেটের ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, নজরুল ইসলাম, আরিফ হোসেন বলেন, পৌরসভা কাউন্সিলার মেহেদী হাসান শুভ তত্ত্বাবধানে মার্কেটের গেট বন্ধ করে ও বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে, ভবন ঘেঁষে বিগত এক বছরের শুরু থেকে দোকান নির্মান কাজ ও দোকান বেচা কেনা চলছে। এতে আলো –বাতাস নেই, খুব গরম, অন্ধকার থাকে। বিদ্যুৎ সংযোগগুলো জরাজীর্ণ । তাই দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছি। পুজি বিনিয়োগ করে পেলছি ,তাই ছেড়ে অন্যত্রে যেতেও পারছি না।অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক আবদুল জলিল, ডাক্তার শোয়াইব হোসেন,সাংবাদিক জাহাঙ্গীর বলেন, অগ্নিনির্বাপক আইনসহ সকল নিয়মনীতি অমান্য করে, যে ভাবে দোকন নির্মান করা হচ্ছে। তাতে মার্কেটি ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবসথা গ্রহন করা জরুরি।পৌরসভা কাউন্সিলার মেহেদী হাসান শুভ বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমতিতে দোকান নির্মানের কাজ চলছে। আমি আত্র ওয়ার্ড কাউন্সিলার হিসেবে দোকান নির্মান কাজ তদারকি করছি।ফায়ার সার্ভিস রামগঞ্জের ষ্টেশন অফিসার নুরুল আফছার বলেন, জিয়া শপিং একটি বড় মার্কেটি। প্রতিদিন হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতার সমাগম ঘটে। বিধি অনুযায়ী অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকা জরুরি। আমাকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে তদন্ত করে, আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।উপজেলা মাসিক সভার সদস্য ও পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্ছু বলেন, নিয়মনীতি অমান্য করে দোকান নির্মান করে, মার্কেটি ঝুঁকি মধ্যে পেলে দিচ্ছে, এ ব্যাপারে বিগত ২টি মাসিক সভায় উপস্থাপন করেছি। তারপরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন ইসলাম বলেন, জিয়া শপিং মার্কেটে দোকান নির্মানের বিষয়ে নিয়ে, সভায় আলোচনা হয়েছে। তাঁরা কিভাবে কাজ করছেন, এ ব্যাপারে কয়েকদিনের মধ্যে রেজুলেশন করে চিঠি পাঠিয়ে জেলা পরিষদের নিকট চিঠি দিয়ে জানতে চাইবো।পৌরসভা মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী বলেন, মার্কেটির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে,গেট বন্ধ ও পাকিং স্থানে অতিরিক্তি দোকান নির্মানের বিষয়টি আমি জেনেছি। পৌরসভা থেকে অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকলেও তাঁরা নেয়নি। উপজেলা মাসিক সভায় কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। আগামী জেলা পরিষদ সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ শাহাজান বলেন, বর্তমানে মার্কেটে দোকান নির্মানের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। সময় করে গিয়ে দেখে পরবর্তি ব্যবস্থা নিব।
রহমত উল্যাহ পাটোয়ারী
রামগঞ্জ,লক্ষ্মীপুর।