দেশের পুরাকীর্তির ঐতিহ্য রক্ষার্থে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধিকল্পে সৌন্দর্যময় বিকাশ সাধনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ - ভুটান - ভারত - নেপালের পুরাকীর্তির অপার সৌন্দর্য বিকাশ সাধনে জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রকল্প হিসেবে এশিয়ান ডেভোলপমেন্ট (এডিবি) ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ মন্দির,দিনাজপুরের বাসন্তী মন্দির,বগুড়ার মহাস্থানগড় এবং বাগেরহাটের বিশ্ব ঐতিহ্য ষাট গুম্বজ মসজিদ - খানজাহান আলী মাজার রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশ পর্যটন অধিদপ্তর কর্তৃক ঐতিহাসিক ষাট গুম্বজ মসজিদের বৃহৎ ঘোড়া দিঘির পাড় জুড়ে দর্শনার্থী ও ভ্রমন পিপাসুদের ভ্রমণকে আরামদায়ক ও সমৃদ্ধ করতে অসংখ্য আধুনিকতার ছোয়ায় উন্নতমানের ভিজিটর সেড তৈরী, আধুনিক টয়লেট, পায়ে চলার মসৃন রাস্তা এবং দর্শনার্থীদের অবকাশ যাপনে রেস্ট হাউজ নির্মান, নবরুপায়নে অবকাঠামো, হযরত খানজাহান আলী (রঃ) এর বসতভিটা সংরক্ষণ এবং এখান থেকে কাঠালতলা পর্যন্ত ১ কিঃমিঃ নতুন সড়ক নির্মিত হয়েছে।
যেটি দীর্ঘদিন মাটির নিচে চাপা পরে ছিল। এটিকে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় পুরাকীর্তির ঐতিহ্যস্থান হিসেবে স্বীকৃতির দাবি রাখে। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে খানজাহান আলী মাজার প্রাঙ্গনে প্রবেশের অদূরেই দেশি-বিদেশী অসংখ্য পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে পর্যটন বান্ধব একটি আন্তর্জাতিকমানের হোটেল মোটেল নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহন উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, খানজাহান আলী দিঘির পশ্চিম পার্শ্ব জুড়ে পর্যটকদের নির্বিঘেœ ঘুরে বেড়াবার জন্য একটি রাস্তা ও অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্য সাধনে বনায়ন, সবুজ ঘাস ও ফুল বাগানের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধিন খুলনা বিভাগীয় প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টোডিয়ান (জিম্মাদার) গোলাম ফেরদৌস জানান, 'দেশের এ সকল বিশ্ব ঐতিহ্য ম-িত এলাকা সমুহের উন্নয়নকল্পে এশিয়ান ডেভোলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক বাগেহাটে পুরাকীর্তি রক্ষায় ২৪কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান এগুলোর পুর্নাঙ্গতা পেতে দ্রুত তার সাথে নির্মান কাজ এগিয়ে চলেছে। পর্যটন কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমনে সরকারের রাজস্ব আয় হবে পুর্বের তুলনায় কয়েক গুন।
ষাট গুম্বজ দর্শনের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকার টিকেটের স্থলে বিশ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। এমনকি ষাট গুম্বজ মসজিদে জুম্মার নামায আদায়সহ সেখানেও বিশ টাকা টিকিট নিতে হয়। তবে এ বেলায় বিষয়টি দর্শনার্থী ও স্থানীয়দের বেলায় এই টিকেটের হার সহনীয় করার জন্য ভুক্তভুগীরা সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন। এখানে একটি যাদু ঘর রয়েছে। যেটি দর্শনার্থী পিপাসুদের জ্ঞান সাগরের গভীরে প্রবেশে সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারে এজন্য বর্তমানে যাদু ঘরটির সংস্কারের কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলেছে।
পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতের জৌনপুর থেকে ৩৬০জন সঙ্গীসহ ইসলাম প্রচার তথা সমাজ সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে এ অঞ্চলে আসেন মহান সাধক হযরত খানজাহান (রঃ)। প্রথমে চাপাইনবাবগঞ্জের ভিতর দিয়ে রাজশাহীর জাহানাবাদে ঘাটি করেন। এরপর যশোরের বারো বাজার হয়ে আসেন বাগেরহাটে। এরপর খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরা-বাগেরহাটসহ বরিশালের একাংশ নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল খলিফাতাবাদ রাজ্য যার রাজধানী ছিল বাগেরহাট।
এসো হে পথিক সখা এ পবিত্র প্রিয় বাগেরহাট
সবুজ সুন্দর শ্যাম রমনীয় ছায়াতরু বাটে।
পীর খানজাহানের সুভাশীষ নিয়ে যাও প্রানে
তোমার চলার পথ প্রসন্ন হোক ছন্দগানে।
লেখক: আজাদ রুহুল আমিন, সাবেক জেলা প্রতিনিধি বিটিভি ও চ্যানেল ওয়ান। সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট প্রেসক্লাব।
|