সারাদেশ
  কুড়িগ্রামের হিমাগারে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন অবিক্রিত আলু
  20-09-2025
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে চারটি হিমাগারে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন আলু অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকার হিমাগারের গেটে আলুর দাম প্রতি কেজি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও কৃষকরা পাচ্ছেন মাত্র ১২ থেকে ১৩ টাকা।
 
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে জমিতে আলু চাষ হয়েছে সাত হাজার একশত হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার  মেট্রিক টন। জেলার চারটি হিমাগরে আলু সংরক্ষণ করা  হয়েছে  প্রায় ৫২ হাজার টন।
 
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন হিমাগারে ৩৩হাজার বিপুল পরিমাণ অবিক্রীত আলু পড়ে আছে। এবারে আলু উৎপাদন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকে কৃষকরা আশানুরূপ  দাম পান নি। আর দুই তিন মাস পরে নতুন আলুর রোপনের মৌসুম শুরু হবে। হিমাগারে থাকা বিপুল পরিমাণ আলু এখনই বিক্রি  করতে না পারলে তা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়বে পাশাপাশি চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 
 
কৃষি ও কৃষকের বাঁচাতে সরকার গত ২৭ আগস্ট হিমাগার গেটে আলুর দাম ২২ টাকা নির্ধারণ করে সাইন বোর্ট দেয়ার পাশা পাশি ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার ঘোষণা দেন। অথচ  বাজারে ১৪ থেকে ১৫ টাকা  দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষকরা পাইকারি হিসেবে হিমাগার থেকে ১২ থেকে ১৩ টাকা দরে  আলু  বিক্রি করছে। স্থানীয় আলু চাষীরা বলেন, আলুর বীজ, সার, কীটনাশক জমির ভাড়া সহ‘৬০.০৫ কেজির এক বস্তা আলু উৎপাদন খরচ ও ভাড়া মিলে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। এতে এক কেজি আলু দাম হয় প্রায়  ২৬ থেকে ২৭ টাকা। অথচ সরকার প্রতি কেজি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও আমরা হিমাগারে পাইকারি দরে ১২ থেকে ১২.৫০ টাকা বিক্রি করছি। ফলে প্রতি কেজি আলুতে ১০ থেকে ১১ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
 
আলু ব্যবসায়ীরা আরো  বলেন, ‘আলুর দাম বাড়লে সরকারি সংস্থাগুলো দাম নিয়ন্ত্রণ করতে নামে। কিন্তু দাম পড়ে গেলে ব্যবসায়ীদের কোনো খোঁজ খবর রাখে না। খুচরা বা পাইকারি ২২ টাকা কেজিতে কেউ আলু কিনছেন না। পাইকারি দরে হিমাগার থেকে ১২ থেকে ১৩ টাকায় কিনে  খুচরা বাজারে ১৪ থেকে ১৫টাকায় আলু বিক্রি করছি। 
 
কুড়িগ্রামের বাবর কো়ল্ড স্টোরের ম্যানেজার শরিফ আল মাসুদ মন্ডল  জানান, এই হিমাগারে ১১ হাজার টন আলু সংরক্ষণ  করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪হাজার  ১০০ টন আলু বিক্রি  হয়েছে। বাজারে আলুর চাহিদা কম থাকায় হিমাগার থেকে কৃষকরা আলু তুলতে  আসছেন না।
 
কুড়িগ্রাম জেলা মাকেটিং অফিসার বীমা মনি শীল জানান, প্রতি মাসে হিমাগারে আলুর  বিক্রি ও  মজুদ  মনিটর করা হচ্ছে। কৃষকরা  ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষকে  জানানো হয়েছে।