সারাদেশ
  সাতক্ষীরার নলতায় কোচিং না করায় আইএইচটি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন
  15-05-2022
সাতক্ষীরা জেলার নলতায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষকের কোচিং এ ভর্তি না হওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
 নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নাম সোলায়মান হোসেন। সে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মোহাম্মদ হানিফের ছেলে এবং আইএইচটি`র ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
 
আহত শিক্ষার্থী জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রতিষ্ঠানের পুরুষ হোস্টেলের ৪০৭ নং রুমে নিয়ে তাকে এই নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে আহতবস্থায় দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত শিক্ষার্থী আরো জানান, তাদের কলেজের রেডিওলজি বিভাগের গেস্ট টিচার সাঈদ হাসান তাকে ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়। এমনকি তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষা দিতে দিবে না বলেও হুমকি দিতে থাকে। কিন্তু আমি তার কাছে কোচিং না করায় শুক্রবার রাতে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ও রশিদ ইসলাম তাদের রুমে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাকে তালের রস খাওয়ার জন্য বলে। একপর্যায়ে তারা খাটের নিচ থেকে লোহার রড, পাইপ বের করে হামলা চালাতে থাকে। আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে তারা বেদম পেটাতে থাকে। সে আরো জানায়, তাদের শিক্ষক অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে আসছে।  যার ফলে শিক্ষক তাদের দিয়ে আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে।
 
বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জি এম ফারুকুজ্জামানের সাথে আলাপকালে তিনি  শিক্ষার্থী সোলায়মানের নির্যাতনের বিষয়টি ঘটনার দিন রাত ১ টার দিকে একজন শিক্ষার্থী কর্তৃক মুঠো ফোনে শুনেছেন বলে জানান।
 
 তিনি ১৪ মে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে অংশগ্রহণের কারণে বর্তমানে সেখানে অবস্থান করায় মুঠো ফোনে এ প্রতিনিধিকে অধ্যক্ষ আরো বলেন-  ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে অত্র প্রতিষ্ঠানে রেডিওলজিস্ট হিসেবে স্থায়ী কোনো শিক্ষক না থাকায় ২য় বর্ষের পাশাপাশি উক্ত বিভাগের ৩য় বর্ষের দায়িত্বও গেস্ট টিচার কালিগঞ্জের সাঈদ হাসান এর উপর ন্যাস্ত করা ছাড়া উপায় নেই । তাই ভুক্তভোগী টিচারের আর্থিক অনিয়ম সহ শিক্ষার্থী সোলায়মান নির্যাতনের নেপথ্যের মূল কারণ কি তা তদন্ত না করে এ মুহূর্তে আর কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন । 
 
 নির্যাতিত উক্ত শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নানাভাবে ডিপার্টমেন্টের পরিবেশ প্রতিনিয়ত নষ্ট করার বিষয়টিও জনশ্রুত থাকলেও শিক্ষার্থী নির্যাতন, আর্থিক অনিয়ম সহ নানা অভিযোগে গেস্ট টিচার সাঈদ হাসান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 
 
তবে আাবাসিক হোস্টেলে অবস্থানরত অবস্থায় ল্যাব শিক্ষার্থীর নির্যাতন, কোচিং না করলে শিক্ষার্থীদের ফেল করানো সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদ হাসান, নির্যাতনের সাথে জড়িত অন্যান্য শিক্ষার্থী তথা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী মহল সহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 
 
এদিকে, ১৪ মে শনিবার সকালে আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে ও ঘটনার বিবরণ জানতে  দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (সখিপুর হাসাপাতালে) আসেন  সাতক্ষীরা—৩ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি। এসময় সংসদ সদস্য বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।