মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন : ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতিবাজ যে-ই হোক ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। কে কোন দলের তা বড় কথা নয়, দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের আমরা ধরে যাচ্ছি। আগের দিন ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে অপর এক বক্তৃতায় রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতাল নিয়ে বলেন, ওই (রিজেন্ট) হাসপাতালের এই তথ্য আগে কেউ দেয়নি, জানাতে পারেনি। সরকারের পক্ষ থেকেই খুঁজে বের করেছি, ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অপরাধ ও দুর্নীতি যার যার তার তার। দল বা সরকার কারও অপরাধের দায় নেবে না। এক্ষেত্রে কেউ দল বা সরকারের ভিতর বা বাইরের হতে পারেন। কাউকে ছাড় দেবেন না প্রধানমন্ত্রী। কোনোমতেই আইনের স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত করতে দেবেন না তিনি। সরকারের শীর্ষ পর্যায় মনে করে, ক্ষমতার টানা তিন মেয়াদে একটি সুবিধাবাদী শ্রেণি নানা ফটক দিয়ে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। তারা দলের নাম ভাঙিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টায় আছে। তাদের কর্মকান্ড দৃশ্যমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার বা দলের কোনো বড় নেতা বা কর্মকর্তা তাদের রক্ষা করতে পারবেন না।এখানে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান কঠোর ও অনমনীয়।
কয়েকটি ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক রকম যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজের ঘর থেকেই শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। এ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের অনেক প্রভাবশালী নেতাকে প্রধানমন্ত্রী সংগঠন থেকে ছুড়ে ফেলে দেন। সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত চরিত্র মো. সাহেদ কিছু রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে ক্ষমতার বলয়ে ঢুকে পড়েন। রাষ্ট্র ও সরকারের শীর্ষ এমন কেউ নেই যে তার সঙ্গে সাহেদের ঘনিষ্ঠ ছবি নেই। এই সাহেদ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটিরও সদস্য ছিলেন। এই পদবি ব্যবহার করে রাষ্ট্রের সব বড় বড় অনুষ্ঠানের সামনের সারিতে বসতেন তিনি। কিন্তু কভিড-১৯ টেস্ট নিয়ে প্রতারণা ও অনিয়ম ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দুটি হাসপাতালই সিলগালা করে দেওয়া হয়।
এ সময়ে অপর আলোচিত চরিত্র ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ার আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে কাজ বাগিয়ে নিত। কিন্তু তাদের প্রতারণা ধরা পড়ার পর এরই মধ্যে এই দম্পতি গ্রেফতার হয়েছেন।
|