আন্তর্জাতিক
  কলকাতায় বইমেলা উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী : বাংলাদেশের ৮০টি প্রকাশনীর অংশগ্রহন
  25-01-2020

দিশা বিশ্বাস , কলকাতা থেকে ১ নভেম্বর থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে ১০ দিন ব্যাপী বাংলাদেশ বইমেলা। এবার এই বইমেলা ৯ বছরে পা দিয়েছে। মেলা শেষ হয় ১০ নভেম্বর। এবারের মেলাও বসছে কলকাতার রবীন্দ্র সদনের কাছে ঐতিহ্যবাহী মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। বাংলাদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন বই নিয়ে এই বইমেলার আয়োজন হচ্ছে প্রতিবছর। বাংলাদেশের বইকে কলকাতার বইপ্রেমীদের কাছে তুলে ধরা এবং দুই বাংলার সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজন করা হয় প্রতিবছর এই বইমেলার।


এবারে বইমেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে বইমেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পররাস্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বইমেলার উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, কলকাতার সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধন দীর্ঘকালের। আর এই বন্ধনকে দৃঢ় করার অন্যতম বাহন এই বই। বই পারে আমাদের দুদেশের মানুষের মধ্যের ভেদাভেদকে দূর করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করতে। আর এরজন্য আমাদের দুদেশকে এগুতে হবে। আমাদের বাংলা বইয়ের বাজারকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।


এদিন বাংলাদেশের পররাস্ট্র মন্ত্রীর লেখা ’বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের বইটির আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উন্মোচন করা হয় ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময় কেন্দ্রের মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ’বিনিময়’এর।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সন্মাননীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ, বাংলাদেশের বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান বাংলাদেশ জাদুঘরের মহাপরিচালক ও বিশিস্ট লেখক, গবেষক শামসুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, কলকাতার পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’এর সম্পাদক সুধাংশু দে । আরও ছিলেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ । উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ- হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।


বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো , কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সন্মিলিত উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে এই বাংলাদেশ বইমেলার।


১০দিন ব্যাপী আয়োজিত এই বইমেলায় মেলা মঞ্চে প্রতিদিন ছিল বিষয়ভিত্তিক সেমিনার, কবিতা পাঠ এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের অংশ গ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেমিনারে যোগ দেবেন ঢাকা ও কলকাতার বিশিস্টজন এবং কবি সাহিত্যিক শিল্পীরা। ছিলেন বাংলাদেশের : শামসুজ্জামান খান, চেয়ারম্যান জাতীয় জাদুঘর, মোস্তফা কামাল ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কালেরকন্ঠ, মফিদুল হক, ট্রাস্টি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ফরিদ আহমেদ, সভাপতি বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, রামেন্দু মজুমদার, নাট্য ব্যক্তিত্ব, হাবিবুল্লাহ সিরাজী , মহাপরিচালক বাংলা একাডেমি, মিনার মনসুর, পরিচালক জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র, খন্দকার মনিরুজ্জামান , ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দৈনিক সংবাদ, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক, কেএম খালিদ, সাংসদ, কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী । আলোচনায় আরও অংশ নেন কলকাতার বিশিস্টজন , কবি সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরাা।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শান্তিনিকেতনের আদিবাসী নাচের দল ’মোহালি’ নৃত্য পরিবেশন করে।
প্রতিদিন মেলা চলে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে শনি ও রোববার মেলা চলে ২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। মেলায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় রয়েছে কলকাতার ভাষা ও চেতনা সমিতি।


এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ৮০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থার ৩০ হাজার টাইটেলের বই ছিল।


যোগ দিয়েছে : অক্ষর প্রকাশনী, দি রয়েল পাবলিসার্স, দিব্য প্রকাশ, অংকুর প্রকাশনী, মাওলা ব্রাদার্স, অনুপম প্রকাশনী, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, কথা প্রকাশ, নালন্দা, কাকলী প্রকাশনী, ভাষাচিত্র, সৃজনী, নবযুগ প্রকাশনী, অন্বেষা প্রকাশন, প্রতীক প্রকাশনা, শোভা প্রকাশ, বর্ণায়ন, প্রথমা প্রকাশন, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, জার্নিম্যান বুবস, সন্দেশ, বেঙ্গল পাবলিকেশনস , ঐতিহ্য, অ্যাডর্ন পাবলিকেশনস, ইউপিএল, সাহিত্য প্রকাশ, পাঠক সমাবেশ, বাংলা প্রকাশ, চন্দ্রাবতী একাডেমি, রিদম প্রকাশনা, আনন্দ প্রকাশ, অন্যপ্রকাশ, পাঞ্জেরী পাবলিকেশনস, আগামি প্রকাশনী, শিখা প্রকাশনী, ইউনিভার্সেল একাডেমি, রোদেলা প্রকাশনী, পুথিনিলয়, বাংলা একাডেমি, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর,তা¤্রলিপি, বিশ্বসাহিত্য ভবন, সময় প্রকাশন, পার্ল পাবলিকেশনস, অন্যধারা, ঝিনুক প্রকাশনী, ধ্রæবপদ, ইতি প্রকাশক, আদর্শ, শব্দশৈলী, আলেয়া বুক ডিপো, নওরোজ কিতাবিস্তান, প্রান্ত প্রকাশন, অনার্য, প্রতিভা প্রকাশ, মূর্ধন্য, র‌্যামন পাবলিসার্স, শিকড়, বাতিঘর, চারুলিপি, বিজয় ডিজিটাল, ইকরি মিকরি, চিত্রা প্রকাশনী, মুক্তচিন্তা, গদ্যপদ্য, সুবর্ণ, জয়তী প্রিয়মুখ, স্বরবৃত্ত, ইত্যাদি, মনন প্রকাশ, কথামেলা প্রকাশন, সদর প্রকাশনী, কবি প্রকাশনী, জাগৃতী প্রকাশনী, আদি প্রকাশন, জনপ্রিয় প্রকাশনী, জেনাকি প্রকাশনী, সাঁকোবাড়ি প্রকাশন উল্লেখযোগ্য।


প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এই মেলা শুরু হয়েছিল পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে। মেলার আসর বসেছিল কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বরে। গত ২০১৭ সাল থেকে এই মেলার আসর বসছে মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। গত বছর এই মেলা শুরু হয়েছিল ২ নভেম্বর থেকে।