সারাদেশ
  ভারতে পাচার গৃহবধু উদ্ধার বাগেরহাট আদালতে স্বামীসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে জবানবন্ধি
  13-06-2019

বাগেরহাট প্রতিনিধি :
বাগেরহাটে স্বামী কতৃক ভারতে পাচার গৃহবধুকে ৯ মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উদ্ধার করেছে। যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পুলিশের সহায়তায় বাগেরহাট পিবিআই বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধুকে উদ্ধার করে বাগেরহাটে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া গৃহবধুকে বৃহস্পতিবার বিকালে বাগেরহাট আদালতে স্বামীসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দিয়েছে।
উদ্ধার হওয়া গৃহবধু জানান, নড়াইল সদর উপজেলার বড়কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখের সাথে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল আরিফের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আরিফ আমাকে নানা অজুহাতে নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে আরিফের মা-বাবা আরিফের সাথে ভারত যেয়ে কাজ করে খেতে বলে। পারিবারিক নানা কলহের মধ্যে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে কৌশলে আরিফ আমাকে নিয়ে ভারতে বোম্বে একটি ফ্লাটে আটকে রাখে। সেখানে আমার মতো আরো তিনটি মেয়ে ছিল। তিন দিন পরে পাশের আরেকটি ফ্লাটে নিয়ে যায় আমাকে। সেই ফ্লাটে আরিফের ছেলে বন্ধুরা আমাকে শারিরিক নির্যাতন করতো। এই ফ্লাটে দুই মাস নির্যাতন ভোগ করার পর হটাৎ বোম্বে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে নবজীবন নামের একটি এনজিও-র কাছে আমাকে হস্তান্তর করে পুলিশ। সেখানে আটমাস থাকার পরে জাস্টিস এ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আমাকে নবজীবন এনজিও’র কাছ থেকে নিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে পিবিআই আমাকে নিয়ে আসে। বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গোয়াদাইর গ্রামের উদ্ধার হওয়া গৃহবধুর বিধবা মা বলেন, অনেকদিন পরে মেয়েকে কাছে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যেতে চাই। বিয়ে করে স্ত্রীকে যে পুরুষ পাঁচার করতে পারে, আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাগেরহাট পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মেয়ে খুজে না পেয়ে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গোয়াদাইর গ্রামের ভীকটিমের মা বাদী হয়ে মানব পাঁচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় পাচার হওয়া গৃহবধুর স্বামী নড়াইল সদর উপজেলার বড়কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখ, তার ভাই ফয়সাল শেখ, মা পরী বেগম ও পিতা আসাদ শেখকে আসামী করা হয়। আদালতের নির্দেশে আমরা পাঁচার হওয়া মেয়েটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। একপর্যায়ে আমরা এনজিও’র মাধ্যমে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।