খেলাধুলা
  বিশ্বকাপের ১২তম আসরের চতুর্থ ম্যাচে আজ মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান
  01-06-2019

পার্থে আফগানিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতেছিল অস্ট্রেলিয়া। গত বিশ্বকাপের ম্যাচটিতে ডেভিড ওয়ার্নার ১৭৮ ও স্টিভেন স্মিথ খেলেন ৯৫ রানের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়া জয় পায় ২৭৫ রানে। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এবারের বিশ্বকাপের শুরুটা আজ হচ্ছে সেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ম্যাচটা ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথের ফেরার মঞ্চও। বল বিকৃতি কেলেঙ্কারি পেছনে ফেলে কয়েকটা অনুশীলন ম্যাচ খেললেও আজ প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক খেলায় দেখা যেতে পারে তাঁদের।

স্টিভেন স্মিথ নিশ্চিতভাবে একাদশে থাকলেও ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। ঊরুর পেশিতে টান পড়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেননি ওয়ার্নার। আজ তিনি খেলতে না পারলে অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ওপেন করবেন উসমান খাজা। আর তিন নম্বরে নামবেন শন মার্শ। তবে ওয়ার্নারের আশা ছাড়ছেন না কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ‘খেলার জন্য মুখিয়ে ওয়ার্নার। অন্য ১৫ জনের মতো উদ্দীপ্ত হয়ে আছে, হাসছে সারাক্ষণ। এটা ভালো ইঙ্গিত।’

গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ৪১৭ রানের জবাবে ১৪২-এ গুটিয়ে যাওয়া আফগানিস্তান বদলে গেছে অনেকটা। বোলিং শক্তি বাড়িয়েছে রশিদ খান ও মুজিব-উর-রহমানের মতো দুটি বিস্ময়কর অস্ত্র। দুজনকেই খেলতে হিমশিম খাচ্ছেন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানরা। তাঁদের সঙ্গে মোহাম্মদ নবীর মতো অভিজ্ঞ স্পিনার থাকায় শচীন টেন্ডুলকারের মতো কিংবদন্তি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের সেরা স্পিন আক্রমণ আফগানিস্তানের।’

২০০৮ সালেও ওয়ার্ল্ড লিগ ডিভিশন ফাইভে খেলত আফগানিস্তান। সেখান থেকে একেকটা ধাপ উতরে এই পর্যন্ত আসাটা রূপকথাকে হার মানানোর মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আরো একবার চমকে দিয়েছে তারা। তবে বিশ্বকাপের ঠিক আগে অধিনায়ক আসগর আফগানের চেয়ারে গুলবাদিন নাইবকে বসানোয় ‘বিদ্রোহ’ ছড়িয়ে পড়ে দলে। আফগানিস্তান সরকারপ্রধানকেও এ নিয়ে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান কজন ক্রিকেটার। গুলবাদিন নাইব টিকে গেছেন এর পরও। নেতৃত্বের এমন বদল দলে তেমন প্রভাব ফেলবে না বলে বিশ্বাস প্রধান নির্বাচক দৌলত খান আহমদজাইয়ের, ‘দলে ঐক্য অটুট আছে। নাইব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেয়েছে আসগর আফগানের। ২০১৫ সালে রশিদ আর মুজিব ছিল না। ওদের পেয়ে এবার আমরা সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছি। (সেটা না হলেও) দলের যা ভারসাম্য তাতে আমরা চমকে দিতে পারি অনেককে।’

সেই চমকের শুরুটা অস্ট্রেলিয়াকে দিয়ে হবে না বলেই বিশ্বাস কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের। দলের ব্যাটসম্যানদের মতো পেসার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, নাথান কোল্টার-নাইলদের ওপর অগাধ আস্থা তাঁর। পাশাপাশি উইকেট দেখে বোলিং আক্রমণ স্পিনার দিয়েও করানোর পরিকল্পনা আছে তাঁর, ‘ইমরান তাহিরের মতো অ্যাডাম জাম্পাও ইনিংসের শুরু করতে পারে। সেটা উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের পেসাররা এ ধরনের উইকেটে ভালো বাউন্স পাবে। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক আমাদের পরিকল্পনা একই (দাপটে খেলা)।’

বল বিকৃতি কেলেঙ্কারির জন্য গ্যালারির দর্শকদের দুয়োর মুখে পড়তে পারেন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। এ নিয়ে স্মিথ আগেই জানিয়েছেন, ‘এসব গায়ে মাখি না আমি।’ দর্শকদের দুয়োয় মেজাজ না হারানোর পরামর্শ দিয়ে রাখলেন অস্ট্রেলিয়ান সাবেক পেসার ব্রেট লিও, ‘স্মিথ-ওয়ার্নারের নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই। ইংল্যান্ডে গ্যালারির সমালোচনা শুনতে হতে পারে ওদের, এ জন্য মাঠে নামতে হবে চামড়া মোটা করে।’

ওয়ার্নার খেললে বিস্ময়করভাবে বাদ পড়তে পারেন উসমান খাজা। কারণ তিন নম্বরে অস্ট্রেলিয়ার পছন্দ শন মার্শ। অথচ গত বছর বিরাট কোহলি ও অ্যারন ফিঞ্চকে পেছনে ফেলে ৫৯.১৫ গড়ে সবচেয়ে বেশি ৭৬৯ ওয়ানডে রান খাজার! দলটা এত বেশি ভারসাম্যপূর্ণ বলেই ষষ্ঠ বিশ্বকাপের স্বপ্ন নিয়ে ইংল্যান্ডে অ্যারন ফিঞ্চরা।