রাজনীতি
  বিএনপিরও ক্ষমা চাওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী
  26-03-2019

নিজস্ব প্রতিবেদক :
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া, তাদের সঙ্গে জোট ও সরকার গঠন করায় জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপিরও ক্ষমা চাওয়া উচিত।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শেখ হাসিনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
মাহমুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী দলগতভাবে ক্ষমা চাইলেও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নারী নির্যাতন থেকে দায়মুক্তি পেতে পারে না। দায়মুক্তি পাবেও না। তারা এত দিন ধরে বাংলাদেশে যে রাজনীতি করেছে, তাদের নিয়ে রাজনৈতিক জোট গঠন করে একসঙ্গে নির্বাচন করা ও সরকার গঠন করার জন্য বিএনপিও একই অপরাধে অপরাধী। বিএনপিও দায়মুক্তি পেতে পারে না। জামায়াতে ইসলামীর ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি বিএনপিরও ক্ষমা চাওয়া উচিত।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর ভেতর থেকে দাবি উঠেছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। তাদের কয়েকজন নেতা ঘোষণা দিয়েছেন পদত্যাগ করার। এই পদত্যাগের ঘোষণা বা তাঁদের মধ্য থেকে ক্ষমা চাওয়ার যে কথাবার্তা বলা হচ্ছে, এগুলো দেশ-বিদেশে চাপমুক্ত হওয়ার একটি কৌশল। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, পৃথিবীর সব দেশ সে কারণে বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আজকে শেখ হাসিনার কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলতে বাধ্য হন, বাংলাদেশ সব সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে গেছে। অথচ একটি পক্ষ, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল, দেশের অগ্রযাত্রাকে টেনে ধরার চেষ্টা করছে এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে চায়, তারা নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার হাত ধরেই বন্দী গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে। তাঁর হাত ধরেই দেশের মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। তাঁর হাত ধরেই মুক্তচিন্তা মুক্তি পেয়েছে। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশের অগ্রগতি। শেখ হাসিনা শুধু অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক নন, মানবতার প্রতীক। তিনি ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি দিলীপ কুমার রায়, প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শেখ হাসিনা’ বইয়ের লেখক সুজন হালদার প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে গণতন্ত্র হাইজ্যাককারী ও অগ্নি সন্ত্রাসীর দল বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলছেন, যা অত্যন্ত হাস্যকর ও জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন, গত ২ মার্চ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের নতুন ঘোষিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের আগে জনগণের হাতে ক্ষমতা ছিল, ৩০ ডিসেম্বরের পরে ক্ষমতা ছিনতাই হয়েছে’- এ বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারান্তরে ড. কামাল হোসেন স্বীকার করে নিয়েছেন যে দেশের ক্ষমতা জনগণের হাতেই রয়েছে। কারণ ৩০ ডিসেম্বরের আগে যেহেতু শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আবারো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এতেই প্রমাণিত হয় দেশের ক্ষমতা আগেও জনগণের হাতে ছিল, এখনো আছে এবং জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে শেখ হাসিনার হাতে আবারো দেশ পরিচালনার ভার তুলে দিয়েছেন। বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বর জনগণ ভোটের মাধ্যমে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টকে প্রত্যাখ্যান করে কষে চপেটাঘাত করেছিল।
ঢাকা সিটি নির্বাচনে এলে আবারো জনগণের চপেটাঘাত খেতে হবে এ ভয়েই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিশ্বের যে কোনো স্থানীয় উপ-নির্বাচনের মানদ-ে অত্যন্ত সন্তোষজনক হয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনদিনের সরকারি ছুটি, বৈরি আবহাওয়া ও নির্বাচনে কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্ধী না থাকার পরেও যে ৩১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে তা অত্যন্ত সন্তোষজনক।
সর্ব-ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চাচলনায় এবং সভাপতি এম নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি, বেলজিয়া, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশের আওয়ামী লীগের নেতারা।