জাতীয়
  মাদকবিরোধী অভিযানঃ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্বেগ
  13-06-2018

মাদকবিরোধী অভিযানঃ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্বেগ
মাদকবিরোধী অভিযান সরকারের নিঃসন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ। তবে বিনা বিচারে কাউকে হত্যা করা কারোরই কাম্য নয়। মাদকবিরোধী অভিযানে গত ২৫ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থনে বন্দুকযুদ্ধে ১৩৩ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হলেন।তাদের মধ্য পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুেদ্ধ ৭০ জন এবং র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। অর্থাৎ এই অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাড়াল ১০৪ । বাকি ২৯ জন মাদক ব্যবসায়ী দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
এদিকে, টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের পরিবারের দেওয়া অডিও রেকর্ডটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব সদর দপ্তর । গত ২৬ মে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একরাম নিহত হওয়ার পর র‌্যাব দাবি করে, তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন । অবশ্য শুরু থেকেই ওই জনপ্রতিনিধির স্বজনরা দাবি করে আসছেন, নির্দোষ একরামকে হত্যা করা হয়েছে। একরামের হত্যাকান্ড নিয়ে চলছে বির্তকের ঝড় ।

মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় অভিযুক্ত মানবাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের কথা বলেছেন তিনি।
দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের দশ বিশিষ্ট নাগরিক। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।বিবৃতিদাতারা হলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ।
এছাড়া আরো উদে¦গ জানিয়েছে জাতিয়তাবাদী দল বি এন পি , বাসদ,গনজাগরন মঞ্চ ,মানবাধিকার সংগঠন আসক সহ বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দল।

অধিকারের প্রতিবেদনঃ পাঁচ মাসে ২২২ টি বিচারবহির্ভূত হত্যা
॥মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন॥
২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে দেশে ২২২ টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করছে। এর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে (ক্রসফায়ার) মারা গেছেন ২১৬ জন। অধিকারের প্রতিবেদনে যেসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বন্দুকযুদ্ধ , গুলিতে নিহত ও নির্যাতনে মৃত্যু । এত বলা হয়, অনেক ক্ষেএে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত মূল অপরাধীকে আড়াল করার জন্যও বিচরবহির্ভূত হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে।
অধিকারের তথ্য অনুযায়ী , মে মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ১৪৯ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া গত পাঁচ মাসে সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৪৭ জন। আহত হয়েছেন ২ হাজার ১০৩ জন। অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে মারা গেছেন ৩ বাংলাদেশি নাগরিক। আহত হয়েছেন ৯ জন এবং অপহরন করা হয়েছে ৯ জনকে।
অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে ৩০৯ টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটে।যৌতুকের কারনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৭৫ াট । যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৯৬ জন । প্রতিবেদনে নারী নির্যাতন বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অপরাধীদের শাস্তি প্রদান ও গনমাধ্যমের সচেতনতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের চিএও তুলে ধরা হয় । সেখানে বলা হয়, বছরের প্রথম পাচঁ মাসে ২৫ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হুমকি দেওয়া হয় ৭ জনকে, লাঞ্চিত হয়েছেন ৭ জন। এ সময় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬ সাংবািদক সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখায় এদের গ্রেপ্তার করা হয়।