প্রবন্ধ
  বেলা ডুবে যায়, জাগ্রত হও
  15-02-2018

দিন যায়, মাস যায় বছর যায় এভাবে জীবন হতে চলে যায় অনেক কাল। ৩ ভাগের ২.৫ ভাগ চলে গেছে বাকি আছে আধা ভাগ আজও চিনতে পারলাম না নিজেকে। নিজেকে আড়াল করে সম্মুখে দাড় করায়েছি মায়াবিনী সংসার।  ছেলের ভবিষ্যত মেয়ের ভবিষ্যত কিভাবে সুন্দর হবে তা নিয়ে করেছি ব্যস্ত স্ত্রীর মহব্বতের চাদরে ঢেকে রয়েছি। কখনো নয়ন মেলে নিজের দিকে তাকাই নাই, একবারও প্রশ্ন করি নাই কে আমি। যাদের চিন্তায় ছিলাম বিভোর তারা যখন পাখির মতো পাখনা মেলতে শিখেছে তখন তারা আমা হতে থাকে ফারাক। শরীরেও বেধে আজ রোগের বসত। কখনও কাশি কখনও জ্বর হাটতে পা ব্যথা বসতে কোমরে ব্যথা উঠতে মাথা গোড়ায় আস্তে আস্তে সব ¯œান হয়ে যাচ্ছে। যৌবনের রসনা এখন ধূসর। আর কখন চিনব আমার সত্বাকে আমার প্রভুকে। আয়াতে আছে ‘মান আরা নাপছাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু।’ অর্থাৎ যে নিজেকে চিনেছে সে যেন তার প্রভুকে চিনেছে। কি করেছি সারাটা জীবন যে সবচেয়ে আপন যে আমার অন্তর কালের সাথী মীশে আছে আমার সাথে সর্বক্ষন তাকে রেখে এই নশ্বর দুনিয়া নিয়ে রইলাম ব্যস্ত। হায়রে আমার মানব জীবন। কি জবাব দিব আল্লাহর কাছে বিচার দিনে তিনি সেদিন হবে কাহার (কঠিন)। প্রতিটি কর্মের চুলচেড়া বিচার হবে। সে দিন আমার থাকবেনা কোন সুপারিশ আমি যে রয়েছি মায়াবীনি সংসার মোহে আবদ্দ।
          হে আদম সন্তান একটা ভুলের কারনে আদিপিতা আদম(আঃ) কেঁদেছে ৩৬৫ বৎসর। নয়ন মেলে দেখি আমার ভুলের শেষ নাই কিভাবে ক্ষমা পাবো কত জনমে মুক্তি পাবো। যে নবীর উছিলায় আদম পেয়েছে মাফ তার সাথে করিনাই প্রেম তাকে করিনা স্বরণ করি না অনুকরন অনুসরণ অথচ তার মত মায়াবী বন্ধু জগতে আর নেই। তাকে দূরে রেখে সয়তানের সাথে করেছি দোস্তী আজ আমার পরন্ত বেলা নেই যৌবনের জৌলশ। আল্লহকে ডাকতে গিয়ে হারায় ফেলি আমার বাক্য তাই দেখে সয়তান হাসে মুচকি হাসি।
              হে মানুষ যৌবনে চিনে নাও নিজেকে দমে দমে ডাকো আল্লহকে। আল্লহ সপ্তম আকাশে নেই আছে আপনার অতি নিকটে। ধর্মের মূলে ফিরে আস। আজ যে ইসলাম  দেখছি তা অধিকাংশ লোভী বিলাসী মুয়াবিয়া- ইয়াজিদের ইসলাম। কারণ ইসলামে নেই লোভ লালসা বিলাসীতা আছে প্রেম মায়া মমতা। মুয়াবিয়া-ইয়াজিদ শাসনামলের পূর্বে ইসলামকে জানুন দেখবেন ইসলাম অনেক সুন্দর। কারবালার প্রান্তরে মুয়াবিয়ার নীল নক্সা অনূযায়ী  ইয়াজিদ চেয়েছিল মোহাম্মদী ইসলাম ধ্বংস করতে। কিন্তু হযরত ইমাম হোসেন (রাঃ) এর আত্ম ত্যাগে আজও ইসলাম জাগ্রত আছে। ইসলামের উপর যত আঘাত এসেছে তা কোন বিধর্মীদের কাছ থেকে আসে নাই ইসলামকে আঘাত করেছে মুসলমানেরা। কারবালার  প্রান্তের ইমাম হোসেন (রাঃ) এর শেষ কথায় তিনি বুঝায়ে গিয়াছেন খাঁটি মুসলমান ও মুনাফেক মুসলমানের পার্থক্য।
            ইমাম হোসাইন (রাঃ) শাহাদাতের পূর্বে শেষবারের মত ইয়াজিদ সৈন্যদের উদ্দেশ্য যে ভাষণটি দিয়ে ছিলেন তা শুুুধু ইয়াজিদের সৈন্য নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মুসলমানদের জন্য একটি শিক্ষা হয়ে রইল। তিনি বলেছেন তোমরা কি আমাকে চেনো না চেয়ে দেখ আমি রাসূল (সাঃ) এর প্রিয়তম  দৌহিত্র, শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) এর ছেলে আমি খাতুনে তুযযহরার ¯েœহের লাল। তোমরা কি নানাজানের মুখে শুননি আমি এবং আমার ভাই হাসান জান্নাতের সরদার আমি  তোমাদের ক্ষতি করেছি যে তোমরা আমাকে হত্যা করতে চাও। আমাকে হত্যা করে তোমরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) কে কি জবাব দেবে? অতঃপর তিনি যে কথাটি বললেন তা সত্য এবং মিথ্যাকে, মুমিন এবং মোনাফেকদের পৃথকী করনের জন্য সমস্ত মুসলিম জনগনের কাছে শিক্ষা হয়ে রইল। তিনি বলেছিলেন তোমরা কি আমার কথা শুনতে পাওনা তোমাদের মধ্যে কি একজন  মুসলমানও নেই? অথচ ইয়াজিদের পক্ষে সেদিন ৩০ হাজার সৈন্য ছিল সবই মুসলমান ।
             সত্যিই সেদিন ইয়াজিদের পক্ষে একজনও মুসলমান ছিলনা। ছিল মুসলমান নামধারী সব মোনাফেক।  ইমাম হোসাইন সম্পর্কে নবীজি (সাঃ) বলেছেন ”আলা হোসাইন মিন্না” ওয়া আনা মিনাল হোসাইন” অর্থাৎ হোসাইন আমা হতে আর আমি হোসাইন হতে। আর তাকেই মুসলমানেরা কারবালা প্রান্তরে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। যা ইতিহাসে বিরল। ইমাম হোসাইন (রাঃ) হত্যার পর ইয়াজিদ এমন হত্যাযোগ্য করেছে লুটপাট করেছে যা আইয়ামে জাহেলিয়ার কাফেরদেরকেও হার মানিয়েছে। ইমাম হোসাইন (রাঃ) হত্যার পর সত্য ঘটনা জানার পর চারদিক থেকে ইয়াজিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের  ঝড় উঠল। তখন ইয়াজিদপন্থী মোনাফেক মৌলভীগণ হাদিস দিল যাহা কিছু ঘটেছে। হোসেনের হত্যা আল্লহর হুকুমে হয়েছে সাধারণ মুসলমানেরা এ কথা বিশ্বাস করায় আন্দোলন স্থিমিত হয়ে যায়। আজো এ হাদিস আমরা মেনে চলেছি। হে জ্ঞানী ভাইগণ একটু বিচার করে দেখুনএ হাদিসের সততা কি? আল্লাহ কি হত্যার হুকুম দিতে পারে জেনা করা কিংবা ব্যবিচারে হুকুম দিতে পারে? কখনো না আল্লাহ পবিত্র সত্ত¦া আল্লাহ ভালো কাজের হুকুম করে এবং মন্দ কাজের কখনও হুকুম করেননা তিনি দয়ালু তারমত আর মায়া কার আছে। মন্দ কাজ সয়তানের তথা ইয়াজিদের কাজ। সুতারাং এমন হাদিস বিশ্বাস করা যায় না।
              আজ যখন দেখি এক মুসলমান আর এক মুসলমানকে হত্যা করে জেনা করে ব্যবিচার করে তখন মনে পড়ে ইয়াজিদের কথা আসলে এরাই ইয়াজিদে অনুসারী এরা নামধারী মোনাফেক মুসলমান। কোথায় সেই সত্য মোহাম্মদী ইসলাম সবই ”! তারে নারে না”, ইসলাম আজ পৃথিবীর মানুষের কাছে সন্ত্রাসের দল আই এস এর দল। জাগ্রত হও হে মুহাম্মদের আদশের মুসলমান হোসাইনের লোক, মিথ্যা পুড়ায়ে সত্য ইসলামকে তুলে ধর গাও ইসলামের জয়গান মোনাফেকদের ভয় পেয়ো না আজ সময় এসেছে সত্য কথা বলার। নিজেকে নবীর আদর্শে আদর্শবান কর মুছে ফেল জগতে পাপরাশি ধ্বংশ হউক ইয়াজিদের ইসলাম। আর কত গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন থাকবে। বেলা ডুবে যায় , জাগ্রত হও, জবানে বল আল্লহু আকবার, বল আসসালাতু ওয়াসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহি।
লেখক ঃ সহকারী পরিচালক(এস্টেট ও ভূমি-১)
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা।