পর্যটন
  পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো উপভোগ করার এখনই সময়
  11-01-2018

॥ মনিরুল ইসলাম মাহিম, খাগড়াছড়ি ॥
বাংলার দার্জিলিং সাজেকসহ অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলাগুলোর পাহাড় ও ঝর্না পর্যটকদের হাতছানি ডাকছে। এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর  হাজার হাজর পর্যটক আসেন পার্বত্যাঞ্চলে। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। এ সময় শীতের হিমেল পরশে পাহাড়ের সজীবতা বাড়ে। যান্ত্রিক জীবনের কর্মতৎপরতা থেকে বেরিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রমণপিঁপাসু মানুষেরা। প্রকৃতি যেন সবটুকু উজাড় করে দিয়ে পেখম মেলে বসে আছে সৌন্দর্য বিকাশে। তবে সাজেকে দিনে কয়েকবার, সকাল-বিকেল  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রহরায় পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হয় আবার তাদের পরিদর্শন শেষ হলে ফিরিয়ে আনা হয় একই ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে। প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আসার কারনে হোটেল গুলোতে   কক্ষ পাওয়া যায়না। তাই থাকার জন্য আগেভাগেই কক্ষ বুকিং দেয়া লাগে। তা না হলে কক্ষ পাওয়া কঠিন। তবে আগের তুলনায় সাজেকেও আবাসিক হোটেলের সংখ্যা বেড়েছে। সাজেক রিসোর্টে  দেখা যাবে কুয়াশার চাদরে মোড়ানো পাহাড়গুলো দূর থেকে দেখে মনে হবে বড় ধরনের বরফের খন্ড। চিরসবুজ সাজেকে মেঘ খেলা করে যায় মাথার উপরে, এ এক অন্য ধরনের অনুভুতি।
পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়ানো সেখানকার পাহাড়ি-বাঙালি মানুষের আয়, রুটি-রুজির ব্যবস্থা। শীতের সময় পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, হস্তশিল্পের তৈরি শোপিজ, তাঁতের কাপড়সহ ঐতিহ্যবাহী ব্যবসাগুলোর বেচা-কেনাও জমে উঠেছে। পর্যটকবাহী পিকআপ গাড়িগুলোসহ পরিবহন ব্যবসাও চাঙা হয়ে উঠেছে। সাজেক ছাড়াও পর্যটকেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন স্পট নীলাচলের কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়ে। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র্রের লেকের স্বচ্ছ জলে, ঝুলন্ত সেতু আর ক্যাবলকারে। সাঙ্গু নদীতে ডিঙি নৌকায় চরে। আর মেঘ পাহাড়ের নীলগিরি, জীবননগর, চিম্বুক, ক্যাওক্রাডং চূড়ায়। অপরদিকে রাঙামাটি জেলার আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, সাজেক ভ্যালি এবং খাগড়াছড়ির আলুটিলা সুরঙ্গর মতো দর্শনীয় স্থানগুলোয়। পর্যটনশিল্পের বিকাশে পাহাড়ের মন্দা অর্থনীতি চাঙা হয়ে উঠেছে। আবাসিক হোটেলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেস্টুরেন্ট এবং হস্তশল্পের তৈরি শোপিজ, তাঁতের কাপড়ের দোকানসহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। খাগড়াছড়ি জেলায় ২২-২৫টি বেসরকারি হোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউজ ও কয়েকটি সরকারি রেস্টহাউস রয়েছে। এগুলোতে ধারণক্ষমতা দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো। কিন্তু প্রতিদিনই তিন থেকে চার হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন। পর্যটকের আগমন বাড়ছে প্রতিদিনই। পার্বত্যাঞ্চলের সম্ভাবনায় শিল্প হচ্ছে পর্যটন। এখানকার অর্থনীতির সঙ্গে পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত। পর্যটকনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য পাহাড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পর্যটকদের আগমন বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকাও ঘুরতে থাকে। পার্বত্যাঞ্চলসহ সারাদেশেই পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করছে সরকার। পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগালে অর্থনৈতিকভাবে দেশ আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।