সম্পাদকীয়
  মহান বিজয়ের মাসে শপথ হোক মানবাধিকার সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার
  10-12-2017

মানবাধিকার শব্দটি ছোট হলেও এর অর্থের ব্যপ্তি অনেক বিস্তার। প্রত্যেক দেশ ও জাতিরই কিছু গৌরবোজ্জল দিন থাকে। সেই দিনগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর এই দিবস গুলোর জন্যে কোন না কোন মাস দেশ ও জাতির জীবনে অতি উজ্জ্বল গর্বের মাস হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। ডিসেম্বর মাস আমাদের জীবনের তেমনই একটি গর্বিত মাস। ১০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস ও ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টধর্মালম্বীদের বড় দিন। 

১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে মানবাদিকার সার্বজনীন ঘোষনাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষনা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি পালিত হচ্ছে। বজ্র আটুনি ফস্কো গিরো। আইন যত কঠিন তা ভাঙ্গা ততই সহজ। ঘটা করে আইন করা হয় যেন তা ভাঙ্গার আনন্দ লাভের জন্য। আইন ভাঙ্গার এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মহা সমারোহে পালিত হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।

নারী-পুরুষ ও শিশু নির্বিশেষে সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকারের প্রভাব অনস্বীকার্য। তাই খৃষ্টপূর্ব প্রায় ২২৮৮ থেকে ২১৩০ সালে পৃথিবীর প্রাচীনতম আইন সংকলন ব্যবলিনের রাজা হাম্মারাবীর নিয়ামাবলীতে মানবাধিকার সংরক্ষনের কথা পাওয়া যায়। খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মদিনার বহু ধর্মভিত্তিক সমাজে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কর্তৃক প্রনীত মদিনার সনদ-এ মদিনার সকল নাগরিকই সমান অধিকার ভোগ করবে এ কথা বলা হয়েছিল। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচিত ও অবহেলিত প্রসঙ্গটির নাম মানবাধিকার। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালনে যতটা থাকে আনুষ্ঠানিকতা তার সামান্যতম অংশ বাস্তবায়িত হলে বিশ্ব থেকে নির্বাসিত হত বিচার বহিভূত হত্যা, শিশু ও নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস, ছিনতাই, রাহাজানীসহ হাজারো অপরাধ। জাতিসংঘের সকল সদস্যভুক্ত রাষ্ট সভা, আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে। সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষনা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরূপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন এছাড়াও, ‘সার্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষনাকে’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখকে নির্ধারন করা হয়। বিশ্বজুড়ে যখন মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ পুরো বিশ্বেই। প্রতিদিনই নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে মিয়ানমারের শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম।

বাঙালির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দিন। এদিন বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা।যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন সেসব শহীদকে বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। বিজয়ের ৪৬ টি বছর পেরিয়ে গেলেও রক্তক্ষরণ আজো থামেনি। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিজয়ের এ দিনে সবার অঙ্গীকার, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার। যেসব বৈষম্য থেকে স্বাধীনতার জন্ম সেইসব বৈষম্যগুলো থেকে এ জাতি বেরিয়ে আসবে এটাই আমাদের কাম্য হোক।