সারাদেশ
  বাগেরহাটে পরিত্রান ক্লিনিকের বিরুদ্ধে শিশু হত্যা মামলা
  01-10-2017

॥ আজাদ রুহুল আমিন, বাগেরবাট ॥

বাদী শাহজাহান হাওলাদার পরিবার নিয়ে জীবননাশের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেসরকারী পরিত্রান ক্লিনিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের অসহায় গরীব শাহজাহান হাওলাদার তার গর্ভবতী স্ত্রী লাকি বেগম ওরফে ময়না বেগমের সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় এ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।

ক্লিনিকের দায়িত্বরত চিকিৎসক মোস্তফা হাসান ও সেবিকাদের অবহেলাজনিত কারনে স্ত্রী ময়না বেগমের গর্ভের সন্তান মস্তিষ্কের অক্সিজেন স্বল্পতার জন্য প্রদাহ ও মস্তিষ্কে রক্ত পাতের কারনে মারা যায়। এ সংক্রান্তে বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মন্ডল সরেজমিন ক্লিনিক পরিদর্শন করে একটি রিপোর্ট বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৪ বাগেরহাট। মামলা নং সিআর ৯৮/১৭ (ফকিরহাট) তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন। যার স্মারক নং ৩৫৮ তারিখ ১১/০৭/২০১৭।

সিভিল সার্জন মন্তব্য লিখিত আকারে পেশ করেন। দীর্ঘ মেয়াদী বাধাগ্রস্থ প্রসব নবজাতকের মৃতু্যুর সম্ভাব্য কারন, নবজাতকের মৃত্যুর সঠিক কারন নির্নয়ের জন্য বাচ্চার ময়না তদন্ত করা প্রয়োজন ছিল, তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের রুগী ব্যবস্থাপনায় অনেকগুলো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়, তার মধ্যে অন্যতম ডিউটি ডাক্তার না থাকায় সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা সম্ভব হয় নাই, সময় মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করলে বাচ্চাটি বেঁচে যেতেও পারতো। এর আগে ময়না বেগমের স্বামী বাগেরহাট প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

পরবর্তীতে অসহায় গরীব পরিবারকে সরকারীভাবে আইনগত সহায়তা প্রদানে সরকারী খরচে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ফকিরহাটে একটি মামলা রুজু হয় । ক্লিনিকের চিকিৎসক মোস্তফা হাসান ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম কে আসামী করা হয়। এই প্রভাবশালী চিকিৎসক মামলা থেকে পরিত্রান পেতে অভিযোগকারীর এলাকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে মামলা প্রত্যাহারের জন্য জীবন নাশের হুমকি দিয়ে বাগেরহাট বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের কার্য্যালয়ে জোর পূর্বক এফিডেভিট করে বাদী শাহজাহান হাওলাদারকে দিয়ে। পরে শাহজাহান হাওলাদার বাগেরহাট জেলা প্রশাসক এবং ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবরে মামলা যাহাতে প্রত্যাহার না হয় সে ব্যাপারে আবেদন করেন।

ম্যাজিষ্ট্রেট জবানবন্দী নেন এবং মামলা পরিচালনা করার ব্যাপারে ভয় ভীতি হুমকি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এলাকার প্রভাবশালী দেলোয়ার হোসেন দিলু পার্শ্ববর্তী বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আরিফুল মল্লিক এবং নেপথ্যে আরো কয়েকজন ব্যাক্তিরা শাহজাহান হাওলাদার, তার স্ত্রী এবং চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া একমাত্র সন্তানকে তুলে নেয়া ও জীবন নাশের হুমকি এবং যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গণধোলাই দেয়া হবে ।

একারণে শাহজাহান আলী সিএন্ডবি বাজারে মোবাইল মেরামত দোকানে এবং এলাকা ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ।

শাহজাহান আলী এই প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পুনরায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এবং র‌্যাব এর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন।

ইতিমধ্যে শাহজাহান হাওলাদারের স্ত্রীর বাচ্চা প্রসব থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত লাখ টাকা খরচ হওয়ায় এবং দোকানে ঠিকমত কাজ না করার কারনে নিঃস্বভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছে। এছাড়া তার ছেলে প্রভাবশালীর ভয়ে স্কুলে যেতে ও চলমান পরীক্ষা দিতে পারছে না।