সারাদেশ
  ধর্ষন মামলায় বাদীকে হুমকী আসামীরা প্রকাশ্যে ॥ খুজে পাচ্ছেনা পুলিশ
  01-11-2017


॥ এম. রফিকুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষন মামলার আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেই সাথে প্রতিনিয়ত ঐ ধর্ষন মামলার বাদীকেসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকী দিচ্ছে। অথচ থানা পুলিশ এলাকায় না গিয়েই সেই প্রভাবশালী আসামীদের গ্রেফতার না করে আসামীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে মামলার বাদীকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এবং সেই সাথে আরো বলেছেন কয়েকদিনের মধ্যেই মামলার চার্যশিট দেওয়া হবে তখন কোর্টে গিয়ে ধর্ষণের বর্ণনা দিয়ে আসবেন , এখানে এসে কোন লাভ হবে না। স্যারের (ওসি) সাথে কথা হয়েছে উনি যেটা বলবেন সেটায় আমি লিখবো। এবং লিখার পরেই আপনি সেটা দেখতে পাবেন বলে থানা থেকে মামলার বাদীকে বের করে দিয়েছেন মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই কামরুল ইসলাম বলে মামলার বাদী স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

মামলার বাদী উপজেলার মির্জাপুর নামোপাড়া গ্রামের মোঃ আনেসুর রহমানের মেয়ে ও দাইপুকুরিয়া ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মোসাঃ সুমিয়ারা খাতুন (শ্যামলী) আরো বলেন, একই বিদ্যালয়ের পিয়ন ও মির্জাপুর কালিতলা গ্রামের মোঃ আব্দুল খালেকের পুত্র মোঃ রুবেল আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে টানা ০৮ মাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ফুঁসলিয়ে আমাকে ধর্ষন করে। এমতাবস্থায় গত ২৯ এপ্রিল অনুমানিক রাত সাড়ে দশটার দিকে আমাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার বাড়িতে ডেকে তার শ্বয়ন ঘরে নিয়ে আমাকে আবারো ধর্ষন করে। তখন আমি আমি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আজ-কাল বলে টালবাহানা করতে থাকে আমাকে বিয়ে করবে বলে বাড়ি থেআেমাকেকৌশলে ফোনের মাধ্যমে মির্জাপুর বাজারে মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজ নামে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘরে ডেকে নিয়ে আসে এবং সেখানে বসিয়ে রাখে। ঐ সময় আমি রুবেলকে বিয়ের কথা বলতেই সে বিভিন্ন ধরণের কথা বলতে থাকলে আমি তখন চিৎকার করে বিয়ের কথাবলতে লাগলে আশপাশের লোকজন আমার চিৎকার শুনে ঘটনস্থলে হাজির হতে থাকলে কৌশলে রুবেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঐ সময় রুবেলের বাবা, মা ও ভায়েরা আমাকে এলোপাথাড়ী কিল ঘুঁষি মারতে থাকে এবং চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে দেয়। তারপরও আমি সেখানেই তাদের মেরে ফেলার হুমকী উপেক্ষা করে দুই দিন ধরে কোন কিছু না খেয়ে বসে থাকি।

এই ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সায়মা খাতুন ও দাইপুকুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম জুয়েল এলাকাবাসীদের নিয়ে একটি শালিস বৈঠকে বসেন কিন্তু উক্ত বৈঠকে তারা হাজির না হওয়ায় তারাসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণ আমাকে আইনের আশ্রয় নেবার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী শিবগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করি। মামলা নং ০৪, কিন্তু মামলা করার এতদিনেও একদিনের জন্য ও ঐ এলাকায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাননি, এমন কি আমি মামলার বাদী তার পরেও উনি আমার সাথে একটি কথাও কোনদিন বলেননি। অথচ তিনি বলছেন কয়েকদিনের মধ্যেই নাকি উনি চার্যশিট দিবেন। তিনি এলাকায় না গিয়েই কারো কাছে কোন কিছু না শুনেই আসামীদের কথা শুনে তাদের মত করে এই মামলার চার্যশিট দিবে বলে আমার ধারণা কারন আসামীরা এলাকায় আছে এবং প্রতিনিয়ত আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে হুমকী দিচ্ছে অথচ পুলিশ তাদের ধরছেনা।এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার এস.আই মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, আমি এখন থানায় নেই। বাইরে আছি তাই ঐ মামলার ব্যাপারে এখন আমি কিছুই বলতে পারবোনা। এ ব্যাপারে কথা বললে পরে বলতে হবে। উল্লেখ্য: ধর্ষন এবং অনশনের বিষয়টি নিয়ে ঐ সময় শিবগঞ্জ এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে নিউজ করা হয়েছিল ।