সারাদেশ
  সন্তানদের বেচে মা-বাবার বিলাসবহুল জীবন!
  01-07-2017


ঝর্ণা দাশ (২৪) ও সঞ্জিব দাশ (৩১) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার সচ্ছ্ল দম্পতি। নগরীর মানিকতলায় মোটামুটি বিলাসবহুল জীবনযাপনই করতেন ওই দম্পতি।
কিন্তু কোনো সন্তান ছিল না তাঁদের। এমনটাই জানতেন এই দম্পতির আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা। শেষ পর্যন্ত হয়তো এমনটাই মনে করতেন সবাই, যদি না তিলোত্তমা নগরীর ‘রেড লাইট এলাকা’ হিসেবে সমধিক পরিচিত সোনাগাছিতে দেড় বছরের এক মেয়েশিশুর পাচারের ঘটনা থানা পুলিশ পর্যন্ত না গড়াত।
সম্প্রতি সোনাগাছিতে শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারু নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে সোনাগাছির এক যৌনকর্মীর বাড়ি থেকে দেড় বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ওই যুবকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটির আসল মা-বাবার সন্ধানে নামে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঝর্ণা ও সঞ্জিব দাশ কেবল একটি নয় তিন-তিনটি সন্তানকে জন্মের পরই বিক্রি করেছেন। আর সব সন্তানই ওই নারীর গর্ভজাত! তবে ঝর্ণা জানিয়েছেন, তিনি দেড় বছরের মেয়েশিশুটিকে রতœা নামে এক নিঃসন্তান নারীর কাছে বিক্রি করেছিলেন। শিশুটিকে যে সোনাগাছির মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা তিনি জানতেন না।
এদিকে সঞ্জিবের স্বজনরা জানিয়েছেন, ঝর্ণার সন্তান বেঁচে আছে এ খবর তাঁরা জানতেনই না। তাঁরা জানতেন, দু’বার এই দম্পতির দুটি সন্তান জন্মের পরপরই মারা যায়।
এদিকে যাঁদের নিয়ে এত কথা, সেই ঝর্ণা-সঞ্জিব দম্পতি একেবারেই নির্বিকার। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে একবারও বিক্রি হওয়া ছেলেমেয়েরা কেমন আছে, তা জানতে চাননি ওই মা-বাবা।
ঝর্ণা বরং বলেছেন, ওই তিন শিশু বিক্রির টাকা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েছেন তাঁরা। আর এতে নাকি তাঁদের কারোই কোনো আক্ষেপ নেই।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার অনেক কিছুই এখনো জানা যায়নি। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ঝর্ণা ও সঞ্জিবের পরিবারের সদস্যদের জেরা করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।