জাতীয়
  কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলব- প্রধানমন্ত্রী
  07-05-2017


মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন
সম্প্রতি কক্সবাজার-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, দুটি এলএনজি টার্মিনালের ভিত্তিফলক উন্মোচনসহ সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং নয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী সুধী সমাবেশে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আধুনিক সুপরিসর বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরের সমপ্রসারিত রানওয়েতে বড় আকারের উড়োজাহাজ চলাচল শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি চালিয়েছেন বিমানের নারী ক্যাপ্টেন তাসমিন দোজা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মেডিকেল কলেজসহ সরকারের গৃহীত প্রকল্প এ শহরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। যেহেতু এখানে পর্যটক আসে, সেহেতু তাদের যাতায়াতের জন্য বিমান নিয়ে এসেছি। এই বিমান আজ কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম অবতরণ করল। আমি এই বিমানের মাধ্যমে এখানে আন্তর্জাতিক রুট পরিচালনার ঘোষণা দিলাম। ’ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেললাইনের দাবি পূরণ হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের রাস্তা চার লেন করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। মহেশখালী দ্বীপে চর জেগেছে। সেসব এলাকা উন্নত করে কক্সবাজারসহ যেন বাংলাদেশ উন্নত হয় সে ব্যবস্থা করেছি। ’ তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর সমপ্রসারণ করতে যে মানুষগুলো আছে, তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প করে দেওয়া হবে। আমরা গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ শুরু করেছি। শিল্পায়নের জন্য সারা বাংলাদেশে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। ট্যুরিস্ট জোন তৈরি করে দেওয়া হবে। নাফ ট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। বাঁশখালীতে অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের একটাই লক্ষ্য, আমাদের প্রতিবেশী দেশ, তাদের সঙ্গে হয়তো সমস্যা থাকতে পারে। আলোচনার মাধ্যমে সেসব সমস্যা সমাধান যেমন করব, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করব। কোথায় কোথায় একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তা নির্দিষ্ট করে আমরা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব। ’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানটা এমন একটা জায়গায়, এই বাংলাদেশকে যদি আমরা সেভাবে গড়ে তুলি, তাহলে বিশ্বে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অবস্থান করে নিতে পারে। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য এবং উত্তর-দক্ষিণ দুই দিক থেকেই সেতুবন্ধটা হতে পারে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যে সেতু হতে পারে, এটা হতে পারে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব অপরিসীম সেটাও আমরা প্রতিষ্ঠা করব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ার এই সাত দেশ মিলে ইতিমধ্যে একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এখানে যে সুবিধা হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের দেশ আমাদের। এখানে ঝড়ঝঞ্ঝাট, ঘূর্ণিঝড় যে কোনো সময় আসে। এই আবহাওয়া সম্পর্কে দ্রুত তথ্য সরবরাহ করা বা আর্থসামাজিক উন্নয়নে এটা অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মিয়ানমার আমরা যৌথভাবে এই চারটি দেশ মিলে ইকোনমিক করিডর, অর্থাৎ কানেকটিভিটির ব্যবস্থা করেছি। এতে রাস্তাঘাট যেমন উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সমপ্রসারিত হবে। ‘শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বিশ্বে কেউ একা চলতে পারে না। সবাইকে নিয়েই চলতে হয়।