আন্তর্জাতিক
  ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, মহান বিজয়ের মাসে শপথ হোক মানবাধিকার সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার
  06-12-2016



প্রত্যেক দেশ ও জাতিরই কিছু গৌরবোজ্জল দিন থাকে। সেই দিনগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর এই দিবসগুলোর জন্য কোন না কোন মাস দেশ ও জাতির জীবনে অতি উজ্জ্বল গর্বের মাস হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। ডিসেম্বর মাস আমাদের জীবনের তেমনই একটি গর্বের মাস। ডিসেম্বরের ১০ তারিখে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস ও ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টধর্মালম্বীদের বড় দিন।  
১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
বজ্র আটুনি ফস্কো গিরো। আইন যত কঠিন তা ভাঙ্গা ততই সহজ। ঘটা করে আইন করা হয় যেন তা ভাঙ্গার আনন্দ লাভের জন্য। আইন ভাঙ্গার এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশেরে মতো বাংলাদেশেও আজ মহা সমারোহে পালিত হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।
নারী-পুরুষ ও শিশু নির্বিশেষে সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকারের প্রভাব অনস্বীকার্য। তাই খৃষ্টপূর্ব প্রায় ২২৮৮ থেকে ২১৩০ সালে পৃথিবীর প্রাচীনতম আইন সংকলন ব্যবলিনের রাজা হাম্মারাবীর নিয়ামাবলীতে মানবাধিকার সংরক্ষণের কথা পাওয়া যায়। খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মদিনার বহু ধর্মভিত্তিক সমাজে হযরত মুহম্মদ (স.) কর্তৃক প্রনীত ‘মদিনার সনদ-এ মদিনার সকল নাগরিকই সমান অধিকার ভোগ করবে এ কথা বলা হয়েছিল।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচিত ও অবহেলিত প্রসঙ্গটির নাম মানবাধিকার। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার  দিবস পালনে যতটা থাকে আনুষ্ঠানিকতা তার সামান্যতম অংশও বাস্তবায়িত হলে বিশ্ব থেকে নির্বাসিত হত বিচার বহির্ভূত হত্যা, শিশু ও নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস, ছিনতাই, রাহাজানীসহ হাজারো অপরাধ।
জাতিসংঘের সকল সদস্যভূক্ত রাষ্ট্র সভা, আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে। সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরূপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন। এছাড়াও, দসার্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাকেদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখকে নির্ধারণ করা হয়। দিবসটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত কিšদ, দক্ষিণ আফ্রিকায় শার্পেভিল গণহত্যাকে স্মরণ করে দিবসটি উদযাপিত হয় ২১ মার্চ এবং ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩১৭তম পূর্ণ অধিবেশনে ৪২৩(৫) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সদস্যভূক্ত দেশসহ আগ্রহী সং¯দাগুলোকে দিনটি তাদের মতো করে উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়। মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে সভা-সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরণের তথ্যচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী প্রধানতঃ এ দিনের সাধারণ ঘটনা।
বিশ্বজুড়ে যখন মানবাধিকার দিবসের নানান আহবান তখন মায়ানমারের মানবাধিকার পরি¯িদতি নিয়ে উদ্বেগ পুরো বিশ্বেই। প্রতিদিনই নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে বার্মার শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম।
বাঙালির সবচেয়ে আনন্দের দিন মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দিন। এদিন বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন সেসব শহীদকে বিন¤্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। বিজয়ের পর ৪৫ টি বছর পেরিয়ে গেলেও রক্তক্ষরণ আজো থামেনি।
সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিজয়ের এ দিনে সবার অঙ্গীকার- ‘সুন্দর ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার।’ যেসব  বষম্য থেকে স্বাধীনতার জন্ম সেই বৈষম্যগুলো থেকে এ জাতি বেরিয়ে আসতে হোক দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।