রাজনীতি
  সড়ক দুর্ঘটনাকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন ইলিয়াস কাঞ্চন
  01-11-2016

 

মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন:

 

মাসব্যাপী ব্যাপক আয়োজনে নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচা’র সারাদেশব্যাপী একযোগে র‌্যালী, সমাবেশ ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে পালিত হয় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। কেন্দ্রীয়ভাবে ২২ অক্টোবর সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সামনে থেকে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের র‌্যালী যাত্রা করে কাকরাইল, বিজয় নগর, পল্টন হয়ে মুক্তাঙ্গনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে নিসচা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার মত দেশের একটি দুর্যোগসম এই সমস্যা নিয়ে সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনীহা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা প্রায়শই দেখি দেশের কোন না কোন সমস্যায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জাতীয় ঐক্যের কথা বেশ জোর দিয়ে বলে থাকেন। জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন পরিচালনায় নিরপেক্ষ সরকার গঠনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সকলের ঐক্যমতের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্খায় দলমত নির্বিশেষে ঐক্যমতের উপর জোর দিয়ে থাকেন। অথচ জনজীবনে অভিশাপ হিসেবে যে সড়ক দুর্ঘটনা জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসে আছে তার ব্যাপারে তাদের ন্যুনতম মাথাব্যাথা আছে কিনা তা ভাববার বিষয়। প্রশ্ন হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি তারা কিভাবে দেখে থাকেন। বিষয়টি কি তাদের ভাবায় না। এসব প্রাণের কি কোন মূল্য নেই। আমি মনে করি সড়ক দুর্ঘটনারোধে যদি তারা আন্তরিক হন তাহলে সড়কে মৃত্যুর হার কমে আসতে বাধ্য। তাই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টিকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে এই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হবেন।

তিনি আরও বলেন, সড়কের বর্তমান অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় জনবসতি ও হাট-বাজারের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সেইসাথে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও অতি জরুরি। সড়ক-মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা বেড়েই চলেছে। কখনো কখনো এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও মনিটরিংয়ের অভাবে আবার সেখানে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠে। এক্ষেত্রে ভুমি, স্থানীয় সরকার, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। সকল উদ্যোগই তখনই শতভাগ কার্যকর হবে যাতে থাকবে সমন্বিত উদ্যোগ ও শক্তিশালী মনিটরিং। আমি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন শক্তিশালী একটি সেল গঠনের। এই সেল গঠিত হবে স্থানীয় সরকার, সড়ক ও সেতু, স্বরাষ্ট্র, আইন, স্বাস্থ্য, ভুমি, শিক্ষা, অর্থ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অধিদপ্তরের সমন্বয়ে। যার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সড়কের বিদ্যমান সকল সমস্যার নিরসন করতে হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সেল গঠন জরুরি। সেই সাথে চালক, মালিক, যাত্রী তথা সর্বস্তরের মানুষের প্রতি অনুরোধ আসুন আমরা সবাই সচেতন হই। ‘দোষারোপ নয়, দুর্ঘটনার কারণ জানতে হবে, সবাইকে নিয়ম মানতে হবে’- এই শ্লোগানে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগে সামিল হই। আমরা বিশ্বাস করি সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন সম্ভব। ভালো থাকুন। নিরাপদে পথ চলুন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসান-উল হক কামাল, মহাসচিব শামীম আলম দীপেন, যুগ্ম মহাসচিব সাদেক হোসেন বাবুল, লিটন এরশাদ,বেলায়েত হোসেন খান নান্টু  ও লায়ন গনি মিয়া বাবুল, অর্থ সম্পাদক নাসিম রুমি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে আজাদ ও শেখ আবদুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মিরাজুল মইন জয়, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ফারিহা ফাতেহ, সহ দপ্তর সম্পাদক সাবিনা ইয়াছমিন, প্রকাশনা সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আবদুল গফুর সাগর, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ কামাল হোসেন খান, সুরাইয়া রহমান মনি, মোঃ সেকান্দর আলম রিন্টু, সৈয়দ আলি আনোয়ার, কামাল হোসেন খান, এডভোকেট দিদারুল আলম দিদার, আনারুল হক, সাধারণ সদস্য ফিরোজ আলম মিলন, ইউসুফ আলী খান, শাহজাহান সাজু, মোঃ মফিজুর রহমান খান বাবু, সালমান আজিম, সুশীল চন্দ্র বাছার, আসাদুজ্জামান এবং পার্বতীপুর উপজেলা কমিটির আহবায়ক আবু বকর সিদ্দিক রাব্বী প্রমুখ।

র‌্যালীতে অংশ নেন, হেলেনা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, নারী মৈত্রী, নাগরিক ঐক্য, সাইক্লিং লেন ইমিপ্লিমেন্ট এসোসিয়েশন, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) শের-ই- বাংলা নগর শাখা, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ শাখা, রামপুরা থানা শাখা ও যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ আরো অনেকে।