শিক্ষাঙ্গান
  দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
  01-10-2016

 

মো. সারোয়ার আহমেদ সাব্বির:

 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পাওয়া, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস, সুন্দর পরিবেশ, সময়মত পাঠদান সম্পন্ন করার আশায় অনেক শিক্ষার্থীর পছন্দ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। শুরুর দিকে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা ভর্তি হলেও এখন অনেক মধ্যবিত্ত/নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকছে বা ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে। মান ভাল হওয়ার কারণে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সুনামও কুঁড়িয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভের প্রবণতাও কমছে। বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৫টি এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ। কিন্তু কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা থেকে তাদের বাণিজ্যকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় নানা রকম অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে। নি¤œমানের শিক্ষক দ্বারা শিক্ষাদান, মাত্রারিক্ত টিউশন ফি আদায়, নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকা এমনকি সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। এ সমস্ত কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। বর্তমানে ২০-২৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের মান বজায় রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যদওি শির্ক্ষার্থীদের দাবী তারা অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, রেজিস্ট্রেশন ফি, টিউশন ফিসহ বিভিন্ন ফি অনেক বেশি হওয়ায় তাদের তা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার উপর রয়েছে থাকা-খাওয়াসহ পড়াশোনার আনুষঙ্গিক খরচের বোঝা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। এছাড়া বছরে তিন সেমিস্টার হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে হয়। এই সময়ের মধ্যে ক্লাস টেস্ট, এ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, মিডটার্ম ও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করতে হয়। যদি বছরে দুই সেমিস্টার হতো তাহলে তারা সার্বজনীন শিক্ষা লাভ করতে পারত। অভিযোগ আছে যে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাব থাকলেও তা সব শিক্ষার্থীকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এত সমস্যার মধ্যেও এত টাকা খরচ করে কঠোর পরিশ্রম করে যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ভাল রেজাল্ট করছেন তাদের আবার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি, বার কাউন্সিলের সনদসহ প্রাপ্তিসহ অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থীকে তার মেধার দ্বারাই বিচার করা উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বারা নয়।

 

সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা সরকার যখন কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয় তখন যেন তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক দ্বারা শিক্ষাদান, টিউশন ফি, নিজস্ব ক্যাম্পামসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সকল সুযোগ-সুবিধা, তাদের আদর্শ এবং উদ্দেশ্য ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে শর্তাবলী এবং নীতিমালা দিয়ে অনুমোদন দেয়। অনুমোদন দেওয়ার পরও ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেন আলাদা একটি বোর্ড/কমিটি গঠন করে মনিটরিংয়ে রাখে, তারা যে সকল শর্তাবলী এবং নীতিমালা মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করছে কিনা। আর যদি পালনা না করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাহলেই শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তাবায়ন সম্ভব হবে।