অর্থনীতি-ব্যবসা
  ১৬ দফা দাবিতে কলকাতায় কৃষক বিক্ষোভ ও সমাবেশ
  01-10-2016

 

মনোয়ার ইমাম ভারত থেকে:

 

গত ৭ সেপটেম্বর পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কৃষক কংগ্রেসের ডাকে কলকাতার ধর্মতলার মোড়ে বিশাল অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

এই সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক ও দীনমজুর শ্রেণীর মানুষ উপস্থি হয়। তাদের বিভিন্ন দাবী নিয়ে বিক্ষেভ দেখায়। তাদের দাবী চাষীদের নায্যমূল্যের দামে সার দেওয়া হোক এবং নায্যমূল্যের দামে ধান ও পাট ও অন্যান্য ফসলের দাম সঠিক ভাবে কৃষকের হাতে আসে- তার জন্য দাবী জানানো হয়। সেই সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্রে মজদুরদের নায্যমূল্যের দৈনিক ৫০০/- (পাঁচ শত) টাকা দিতে হবে সরকারি সার ও কৃষিসরঞ্জাম এবং কৃষক ও মজদুরদের নিরাপত্তার দাবী করা হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রী অভিজিৎ মুখার্জী (লোকসভা সাংসদ), মিলটন রসিদ (বিধায়ক, পঃবঃ বিধানসভা) এবং শ্রী সুদীপ মুখার্জ্জী (বিধায়ক, পঃবঃ বিধানসভা) এবং শ্রী শুভষ্কর সরকার (সর্বভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, সাধারন সম্পাদক), শ্রী দেববৃত বসু, শ্রীমতী কৃঞ্চা দেবনাথ, শ্রী আশুতোষ মুখার্জী, সৌরভ ঘোষ, ইসলাম খান, কাজেম আলি।

সভার শেষে বিক্ষোভে অংশ গ্রহনকারী আগত কৃষক ও ক্ষেতমজুর মানুষদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পশ্চিমবঙ্গ কৃষান ক্ষেতমজুর কংগ্রেসের সভাপতি শ্রী তপন দাস।

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কিষাণ ক্ষেতমজুর, কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তপন দাস স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে  ১৬ টি দাবী সম্মিলিত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক ও জন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সকল মানুষ এক হও বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করা হয়।

সারা বাংলা জুড়ে কৃষক সমাজ তথা সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একদিকে ‘কৃষক তার ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক, পাচ্ছে না। চাষের জন্য বিদ্যুৎ- এর শুধু ঘাটতিই নয়, বিদ্যুতের মূল্য ও বেশি এবং এর স্বাভাবিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিরেস মূল্য আকাশ ছোঁয়া, ফলে  সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে। এর প্রতিবিাদে বাংলার কৃষক সমাজ আজ রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়েছে। বাঙলার কৃষক, ছাত্র যুব রাজপথে, অত্যাচারী কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার হুঁশিয়ার।

আমাদের দাবীগুলি:-

১) সমস্ত রকমের ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য যাতে কৃষক পায় তার ব্যবস্থা রাজ্য সরকারকে করতে হবে।

২) অবিলম্বে উন্নতমানের সার, চাষের জন্য প্রয়োজননীয় বিদ্যুৎ সহ সমস্ত কৃষি যন্ত্রপাতি ভরতুকি দিয়ে কুষকদের সরবরাহ করতে হবে।

৩) চাষের জলের জন্য ক্যানেল, খাল সংস্কার সহ ডিপ টিউবয়েল বসানো ছাড়াও পুরানো ডিপ টিউবয়েল মেরামত করতে হবে।

৪) সারের কালোবাজারী, হিমঘরের কালোবাজারী আলুর বন্ড বিলি নিয়ে দলবাজী বন্ধ করতে হবে।

৫) ক্ষেত মজুরদের মজুরী দৈনিক ৫০০.০০ (পাঁচ শত) টাকা করতে হবে।

৬) গ্রামে মহাজনি প্রথা রোধ করে দরিদ্র কৃষকদের কৃষি ঋণ মুকুব করতে হবে।

৭) অভাবী আত্মহত্রাকারী কৃষক পরিবারের একজনকে রাজ্য সরকারী চাকরী দিতে হবে। এবং পরিবারকে দশ লক্ষ টাকা করে অনুদান দিতে হবে।

৮) অবিলম্বে কৃষকদের উপর থেকে গণজরিমানা সহ সমস্তরকম অত্যাচার জুলুমবাজী বন্ধ করতে হবে।

৯) গণবন্টন ব্যবস্থা, রেশনিং ব্যবস্থা সহ ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিতরণে স্বচ্ছতা আনতে হবে। দলবাজী বন্ধ করতে হবে।

১০) বি.পি.এল. তালিকা ভুক্ত গরীব কৃষকদের নূন্যতম মাসিক ২০০০ টাকা করে ভাতা দিতে হবে।

১১) সমবায় ব্যাস্ক, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাস্ক, মার্কেটিং সোসাইটিগুলিকে কৃষকদের কৃষিঋণ মুকুব করতে হবে।

১২) বৃদ্ধ, অক্ষম কৃষকদের ভাতা দিতে হবে।

১৩) ধান ও পাটের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।

১৪) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১৫) চা বাগিচার উন্নতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। অনাহারে মৃত চ-বাগিচা শ্রমিক পরিবারে, উপযুক্ত ক্ষতিপূরন সহ সরকারী চাকুরী দিতে হবে।

১৬) রাজ্য জুড়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি সহ মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।

অবিলম্বে আমাদের দাবী গুলির প্রতি সরকার সুবিচার না করলে কৃষক কংগ্রেস বৃহত্তর গণ আন্দোলনের পথে যাবে।