শিশু-কিশোর
  বাকিদের হিসেব নেই! শিশু শ্রমের আওতায় এখনো ১৭ লাখ শিশু
  01-07-2016

 

 

১৭ লাখ শিশু এখনো শিশুশ্রমে। বাংলাদেশে এখন সাড়ে ৩৪ লাখ শিশু কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ শিশু রয়েছে, যাদের কাজ শিশুশ্রমের আওতায় পড়েছে। বাকি শিশুদের কাজ অনুমোদনযোগ্য।

 

কর্মরত শিশুদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত আছে ১২ লাখ ৮০ হাজার। আর ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। তাদের কাজের বৈশিষ্ট্য জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য বেশ হুমকিস্বরূপ।

শিশুশ্রমের এ চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সমীক্ষায়। জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা ২০১৩-তে এ তথ্য পাওয়া গেছে। চলতি বছসের প্রথম দিকে এ সমীক্ষাটি চূড়ান্ত করেছে বিবিএস।

কর্মরত শিশু, শিশুশ্রম, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা রয়েছে। ১৮তম শ্রম পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং ২০১৩-এর সংশোধন অনুসারে কর্মরত শিশু বলতে বোঝায়, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে যারা সপ্তাহে ৪২ ঘণ্টা পর্যন্ত হালকা পরিশ্রম বা ঝুঁকিহীন কাজ করে। এ শ্রম অনুমোদনযোগ্য। তবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী কোনো শিশু যদি কোনো ধরনের ঝুঁকিহীন কাজও করে, তবে সেটা শিশুশ্রম হবে। তারাও কর্মরত শিশুদের মধ্যে পড়ে যায়। আর ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী কেউ যদি সপ্তাহে ৪২ ঘণ্টার বেশি কাজ করে, সেটা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম হিসেবে স্বীকৃত।

প্রায় এক দশকের ব্যবধানে কর্মরত শিশুর সংখ্যার পাশাপাশি শিশুশ্রম অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিবিএসের ২০০৩ সালের জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষায় দেখা গেছে, তখন প্রায় ৭৪ লাখ কর্মরত শিশু ছিল। তাদের মধ্যে ৩১ লাখ ৭৯ হাজার শিশুর কাজ শিশুশ্রমের আওতায় ছিল। তবে এক দশকের ব্যবধানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা তেমন কমেনি, কমেছে মাত্র ১১ হাজার। ২০০৩ সালে দেশে ১২ লাখ ৯১ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ছিলো। ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিশুশ্রম নির্মূল নীতিমালায় ২০১৬ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করার কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান এ বিষয়ে  কে বলেন, ২০১৬ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করা সম্ভব হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। তবে শিশুশ্রম কমানোর চেয়ে বেশি জরুরি হলো ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নির্মূলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি পরামর্শ দেন, যেসব পরিবারের শিশুরা কাজ না করলে সংসার চলবে না, এমন পরিবারকে কিছু ভাতার ব্যবস্থা করে ওই শিশুকে কাজে যোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখা যেতে পারে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে ওই শিশুর দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে।