রাজনীতি
  সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রতিবেদন ইউপি নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করেছে আ’লীগ
  01-07-2016

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

 

ইউপি নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘু ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা যে হামলার শিকার হয়েছেন তার প্রায় সব ঘটনাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাধ্যমে ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ১৬ জুন সুজন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন-২০১৬’ এর সার্বিক প্রতিবেদন শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

দিলীপ কুমার বলেন, বিভিন্ন ধাপে শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রায় প্রতিটি ঘটনা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ঘটেছে। এই নির্বাচনে দেশের কোনো কোনো অঞ্চল, বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা জেলায় নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তীকালে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় হামলার শিকার হয়েছেন। যার প্রায় প্রতিটি ঘটনা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অথবা তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের মাধ্যমে হয়েছে।

নির্বাচনে হতাহতের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনে বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামে- গঞ্জে একদিকে যেমন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, তেমনি অন্যদিকে প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরোধে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সহিংসতা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে।

প্রাণহানির ঘটনার তথ্য পর্যালোচনা করে তিনি জানান, প্রথম ধাপের নির্বাচনের আগে ১০ জন, নির্বাচনের দিন ১১ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর থেকে ২য় ধাপের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ১১ জন, ২য় ধাপের নির্বাচনের দিন ৯ জন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে ৩য় ধাপের আগ পর্যন্ত ১৭ জন, ৩য় ধাপের নির্বাচনের দিন ৫ জন, ৩য় ধাপের নির্বাচনের পর চতুর্থ ধাপের পূর্ব পর্যন্ত ১০ জন, চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের দিন ৮ জন এবং চতুর্থ ধাপের পর পঞ্চম ধাপের পূর্ব পর্যন্ত ২৩ জন, পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের দিন ১৫ জন আর শেষ ধাপের নির্বাচনের আগে ৮ জন, নির্বাচনের দিন ৫ জন এবং নির্বাচনের পরে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে দেখা যায় নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের পর ১৪৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এ সময় দিলীপ কুমার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে ব্যাপক সংস্কারের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনা ও শক্তিশালী করা, স্থানীয় সরকারকে বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে আরও ক্ষমতা, দায়িত্ব, সম্পদ দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৃত অর্থেই শক্তিশালী করাসহ নির্বাচনে সহিংসতা রোধে সুজনের পক্ষ থেকে কিছু করণীয় তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সুজনের নির্বাহী সদস্য ও কলামলেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সভাপতি হাফিজ উদ্দীন আহমেদ খান প্রমুখ।