খেলাধুলা
  দাম বাড়ল ছোলা-চিনি-রসুনের রমযানকে ঘিরে তৎপর অসাধূ ব্যবসায়ীরা
  02-06-2016

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারি প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় রোজার আগেই আরেক দফা বেড়েছে ছোলা, চিনি, রসুনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তারা সরকারের কোনো নির্দেশনাই মানছেন না।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, রমজানে ছোলা ও ডালের দাম আরও বাড়বে। আর এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।

এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এবার নতুন কৌশল নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানে দাম বাড়ালে যেহেতু সমালোচনা হয়, চাপ আসে, তাই আগেভাগেই তারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও রমজানে আরেক দফা বাড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ২২ মের হিসাবে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ছোলার দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৮ থেকে ৮৪ টাকা, বর্তমানে দাম বেড়ে হয়েছে ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। চিনি প্রতিকেজি গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা, এখন হয়েছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। রসুন (দেশী) মানভেদে প্রতি কেজি গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ১২০ টাকা, সেটি হয়েছে ১০০ থেকে ১৩৫ টাকা।

ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি গত সপ্তাহে ছিল ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা, সেটি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। অন্যদিকে এক মাসের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে মোটা চাল, প্যাকেট আটা, খোলা ও প্যাকেট ময়দা, সব ধরনের পেঁয়াজ এবং জিরা।

২২ মে রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, চিনি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা।

এদিকে বাজারে সরবরাহ সংকটের অজুহাত তুলে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে রসুন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে রসুনের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পুরান ঢাকার পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে দেশীয় রসুনের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। আর আড়তগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দেশী রসুনের বস্তা।

বিক্রেতাদের কয়েকজন জানান, পাইকারি দরে প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১০৫ টাকা। আর চায়না থেকে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়।

বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল সব দেশেই ডালের উৎপাদন কম হয়েছে। এসব কারণে ডালের দাম বাড়ছে। ছোলার দাম আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতি টনে গত বছরের তুলানায় ৩০০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডলার বেড়েছে। নেপালি মশুর ডাল আগে ছিল প্রতি টন ১ হাজার ৩০০ ডলার। এখন হয়েছে ১ হাজার ৭০০ ডলার।

বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন। মন্ত্রী প্রতিবারই অযথা দাম না বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের বলেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য সরকারি টিমগুলোর দুর্বলতার কারণেই এটা হচ্ছে।

এদিকে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২৫ দিনের পণ্য বিক্রয় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে টিসিবি। ভ্রাম্যমাণ ট্রাকসেল ডিলাররা রাজধানীসহ সারা দেশে ১৭৪টি স্থানে ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে দৈনিক ১ হাজার ৫০০ কেজি বা লিটার সমপরিমাণ পণ্য বিক্রি করবেন। বিক্রয় কর্মসূচিতে ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর, ছোলা ও মশুর ডাল বিক্রি করা হবে।

এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ব্রি. জে. আবু সালেহ মোহাম্মদ গোলাম আম্বিয়া বলেন, আমরা দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। কিন্তু পুরো বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ টিসিবি করতে পারবে না। এজন্য সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি কাজ করবে।