রাজনীতি
  ওসির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নির্বাচিত মহিলা মেম্বার
  02-06-2016

  নিজস্ব প্রতিবেদক 

আমি একজন নির্বাচিত মহিলা মেম্বার। অথচ একজন পুলিশ কর্মকর্তার দাবীকৃত চাঁদা দিতে না পারায় তার অত্যচার নির্যাতনে আমার পরিবার নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।  ফেনী জেলার দাগনভূঞা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ারুল আজিমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন দাগনভূঞার দক্ষিণ চন্ডীপুরের লমী জমাদার বাড়ির বাসিন্দা ও ৫ নং ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য (মেম্বার) নিলুফা আক্তার।

৯ মে মানবাধিকার খবরের কার্যালয়ে এসে তিনি এ অভিযোগ করেন।

 

এসময় নিলুফা আক্তার বলেন, দুই লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় নির্যাতন ও একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম।

তিনি বলেন, ‘ভাসুর নাসির উদ্দিন তার  ছেলেকে ওমানে পাঠাতে  প্রতারিত হয়ে ভুয়া ভিসা  প্রদানকারী আবদুস সাত্তার গংদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর থানায় মামলা করি। মামলা নম্বর-২৩, তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১২। ভিসা অর্থ  লেনদেনের স্ট্যাম্পে  প্রধান সাক্ষী তার স্বামী রফিক আহমদ। মামলার পর  থেকেই সন্ত্রাসীরা তার স্বামী ও ভাসুরকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। নিরুপায় হয়ে আমি দাগনভূঞা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।’ নিলুফা আক্তার বলেন, মামলা হওয়ার পর থেকে ওসি আনোয়ারুল আজিম শত্রুপক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।’

এসময় তিনি অভিযোগ করেন জানান, ‘পরিদর্শক আনোয়ারুল আজিম নিয়ম ভেঙে প্রায় ৮ বছর টানা একই থানায় কর্মরত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি পাশের কবিরহাট উপজেলায়। যার সুবাদে স্থানীয় পেশাদার জঙ্গী, খুনি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবজিসহ সামাজিক সকল বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের আশ্রয়দাতা, প্রশ্রয়দাতা, গডফাদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও সেখানে তিনি একটি গুন্ডা বাহিনী গঠন করে যাবতীয় অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।’

নিলুফার অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ১৭ জুন ২০১৪ইং তারিখে আমার মায়ের কুলখানিতে ওসি (তদন্ত) আনোয়ারুল আজিমের পালিত গুন্ডা বাহিনী মামলা ও দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।

তিনি বলেন, ‘ইতঃপূর্বে আমার স্বামী এবং চাচার নামে বাংলাদেশে কোথাও মামলতো দুরের কথা কোন থানায় একটি জিডি এট্রিও নেই। আমার স্বামী পেশায় একজন প্যাথলজিষ্ট। নিজের ও পরিবার পরিজনের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের তাগিদে দৈনিক সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তিনি ল্যাবে কর্মরত থাকেন।’

এসব উল্লেখ করে নিলুফা বলেন ‘একাধিক অভিযোগ দাখিল করেও রহস্যজনক কারণে এই পুলিশ কর্মকর্তার সন্ত্রাসী ও অবৈধ কমকা-ের প্রতিকার চেয়ে কোথায়ও সু-বিচার পাইনি। এমনকি জাল ভিসার প্রতারক আদম ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার ও শফিউল্লাহ গং এর কাছ থেকে আমাদের পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রথমে এলাকায় সালিশী বিচার করেও টাকা ফেরত পাননি।’

তবে নিলুফা জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিগত ১ আগস্ট ২০১৫ ইং তারিখে ওসি (তদন্ত) এর বিরুদ্ধে গোপনীয়ভাবে বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হয় (স্মারক নং-২৩৬, তাং- ২৮ সেপ্টম্বর/২০১৫খ্রিঃ) তদন্তে রফিকের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া সহ, নানা হয়রানিমুলক অপকর্ম, অবৈধ ব্যবসা, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সকল অভিযোগের সত্যতা খুজে পাওয়া যায় । তারপরেও রহস্যজনক কারণে আনোয়ারুল আজিম উক্ত থানায় বহাল তবিয়তে কর্মরত আছেন। অপরদিকে এসব কারণে আনোয়ারুল আজিম আমাদের হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। ফলে  আমি, আমার স্বামী ও আমাদের ছয় সন্তান প্রায় ২ বছর যাবত ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে দাগনভূঞা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ারুল আজিমের সাথে যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) আসলাম উদ্দিন মানবাধিকার খবরকে বলেন, ‘আমি এই অভিযোগটি শুনেছি। তবে নিলুফা আক্তার আমার সাথে দেখা না করে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন নিবেদন করে বেড়াচ্ছেন।  তিনি যোগাযোগ করলে আমি আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।