লাইফস্টাইল
  সমকাম বিষয়ক পত্রিকা রূপবানের সম্পাদকসহ খুন ২
  01-05-2016

রাজধানীর কলাবাগানে বাংলাদেশে সমকাম ও হিজরাদের অধিকার বিষয়ক প্রকাশনা রূপবানের সম্পাদক ও  মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নানকে তার বন্ধু মাহবুব তনয়সহ কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তেতুল তলাগলির ৩৫ নং বাসায় সংগঠিত এ হত্যার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে আল কায়েদার ভারত উপমহাদেশের সংগঠন আনসার আল ইসলাম। ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, বাসায় ঢুকে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কলাবাগানের ৩৫ নং আসিয়া মঞ্জিল এর দ্বিতীয় তলায় থাকতেন জুলহাস। ওই বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী পারভেজ হামলায় আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় ওই বাড়িতে দায়িত্ব পালন করছিলেন আরেক নিরাপত্তা কর্মী সুমন। পারভেজকে তিনিই হাসপাতালে নিয়ে যান। সুমন গণমাধ্যমকে জানান, পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক ওই বাড়িতে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী বলে প্রবেশ করে দু’তলায় উঠে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা নিচ থেকে চিৎকারের শব্ধ শুনতে পান। কি হচ্ছে জানতে পারভেজ উপরে উঠলে হামলাকারীরা তাকে ছুরি দিয়ে চোখে আঘাত করলে তিনি লুটিয়ে পড়েন। সুমন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

নিহত জুলহাস মান্নান সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির খালাতো ভাই। জুলহাস রূপবান পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ওই পত্রিকাটি সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করতো। জুলহাস নিজেও সমকামীদের অধিকার নিয়ে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছিলেন।

 

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কলাবাগান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাবিবুর রহমান জানান ২৫ এপ্রিল  বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কয়েকজন যুবক পার্সেল দেওয়ার কথা বলে ওই বাড়িতে ঢোকেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই যুবকেরা জুলহাজ ও মাহবুব তন্ময়কে চাপাতি দিয়ে মাথাসহ সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ওই সময় বাসায় ছিলেন জুলহাজের বৃদ্ধ মা ও গৃহকর্মী। ঘটনার আকস্মিকতায় তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। ওই যুবকেরা দুজনকে কুপিয়ে দ্রুত বাসা থেকে বেরিয়ে যান। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন ওই বাড়ির দিকে ছুটে যান। তার আগেই যুবকেরা দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন স্থানীয় লোকজন তাদের ‘ছিনতাইকারী’ ‘ধর, ধর’ বলে চিৎকার করে ধাওয়া করেন। তখন ওই যুবকেরা আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে লোকজনদের হুমকি দিতে দিতে পালাতে থাকেন। একপর্যায়ে কয়েকটি গুলি ছুড়ে তারা পালিয়ে যান।

 

এদিকে, ঘটনার পর ডা. দীপু মনিসহ অনেকেই ওই বাসায় ছুটে যান। পুলিশের আইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার কর্তারাসহ অনেকেই ওই বাসায় গিয়ে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেন। 

এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলা গত ২৭ এপ্রিল ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক