শিশু-কিশোর
  অটিস্টিক শিশুরা ফুলের মতো : সংস্কৃতিমন্ত্রী
  01-05-2016

সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, অটিস্টিক শিশুরা ফুলের মতো। তারা অসাধারণ শিশু। কারণ তাঁদের নানা সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হয়। তিনি বলেন, এসব শিশু ফুলের মতো পবিত্র। সঠিক পরিচর্যা পেলে যারা অসাধরণভাবে নিজেদের বিকশিত করতে পারে।

 

নবম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ সব কথা বলেন। এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ও ‘অটিজম লক্ষ্য ২০৩০: স্নায়ু বিকাশের ভিন্নতার একীভূত সমাধান’ স্লোগানকে ধারণ করে সচেতনতা দিবস পালিত হয়।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও বিএসএমএমইউ’র ডিন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান।

 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন  ইনস্টিটিউট অব প্যাডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)-এর ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট সাংসাদিক আনিসুল হক, কৈকার কান্ট্রি ডিরেক্টের মি. জোই হিউন গুয়ে প্রমুখ।

 

সংস্কৃতিমন্ত্রী সকল শিশু মা-বাবার উদ্দেশ্যে বলেন, প্রত্যেক মা-বাবা যেন তাদের সন্তানকে একটু সময় দেন। আত্মকেন্দ্রিকতা ভুলে সামাজিক দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। সন্তানরা যেন স্কুল, টেলিভিশনের পাশাপাশি আকাশ, ফুল, নদী ও পাখির ডাক শোনা, দেখা এবং উপভোগ করারও সুযোগ পায়।

 

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, অটিস্টিক শিশুদের সেবা, শিক্ষা ও উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য কন্যা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভলপমেন্টাল ডিসঅর্জার-এর চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, বিশেষ উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় অটিস্টিক শিশুরা আজ আর সমাজের বোঝা নয়।

 

 

তিনি বলেন, অটিস্টিক শিশুদের আজ সম্মানের চোখে দেখা হচ্ছে। তাদের সমাজের মূল গ্রোতধারায় নিয়ে আসা হচ্ছে। মানুষ জানে অটিজম কী। তিনি বলেন, যেখানেই মানবতা ও উন্নয়ন সেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণেই আজ অটিস্টিক শিশুদের অভিভাবকরা একা নয়, তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ তাদের দেবতুল্য শিশুদের পাশে সমগ্র জাতি রয়েছে।

 

(ইপনা)-এর ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার বলেন, এটা আজ প্রমাণিত অটিস্টিক শিশুরাও হতে পারে বিশেষ কিছু।

 

এছাড়া অন্যান্য বক্তারা বলেন, আজ থেকে এক দশক আগেও অটিজম রোগটির সঙ্গে আমরা পরিচিত ছিলাম না। তখন অসাধারণ এসব শিশুদের ভুতে ধরেছে, জিনে ধরছে বলে অপ-চিকিৎসা করা হতো। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। দেশে বিশ্বমানের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন আর অটিস্টিক শিশুরা সমাজের বোঝা নয়। সঠিক চিকিৎসা ও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে তারা যেকোনো অসাধ্য সাধন করতে পারে। তবে এর জন্য সামাজিক উদ্যোগ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তারা।

 

অনুষ্ঠানে ৯ম অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত পরান কথা শিরোনামে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন শিশুদের বাবা-মাদের ভেতর থেকে ১৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের শেষে অটিজম বৈশিষ্ট সম্পন্ন শিশুরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশ করে।