তথ্য - প্রযুক্তি
  ঘুরে আসতে পারেন দিল্লীর ঐতিহাসিক স্থান ডলস মিউজিয়ামঃ
  01-04-2016

সারা বিশ্ব (৮৫ টি দেশে) থেকে ৬ হাজারের ও বেশি পুতুলের সংগ্রহ স্থান পেয়েছে ১৯৫৪-য় প্রতিষষ্ঠিত শঙ্করস্ ইন্টারন্যাশনাল ডলস্ মিউজিয়ামে। বিশেষ করে জাপানি পুতুলের স্থানচমকপ্রদ। তবে সংখ্যায় একের তিনঅংশ ভারতীয় সংস্কৃতিও রুপ পেয়েছে পুতুলে। সোম ছাড়া প্রতিদিন ১০ টা হইতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা। আর শিশুদের জন্য আছে প্লে কর্ণার। দিল্লী গেটের অদূরে বাহাদুর শাহ জাফর মার্গে আই.টি.ও. অফিসের পাশে নেহেরু হাউসে এই মিউজিয়াম।

 

রাজঘাটঃ
জলপথ থেকে ৪ কিঃমিঃ দূরে ফিরোজ শাহ-র উত্তর পূর্বে দিল্লী গেটের সন্নিকটে রিং রোডে যমুনা কিনারে গড়ে উঠেছে নব ভারতের অবিস্মরণীয় জাতীয় মন্দির। জওহরলাল নেহেরু রোডও এসে শেষ হয়েছে রাজঘাটের বিপরীতে। জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর শেষকৃত্য হয় মৃত্যুর পরদিন ১৯৪৮-এর ৩১ শে জানুয়ারী এখানে। স্মারকরুপে কালো মর্মরে বর্গাকার সমাধি বেদী। খোদিত হয়েছে গান্ধীজির শেষ উক্তি ‘হে রাম’। সাধারণ অসাধারণ, দেশী- বিদেশী দিল্লী ভ্রমণার্থীরা শ্রদ্ধা আসেন জাতির পিতাকে। প্রতি শুক্রবার (মৃত্যুদিন) উপাসনা বসে। সোম ছাড়া ১০টা হইতে ৫ টায় রাজঘাটের আর এক দ্রষ্টব্য ছবি ভাষ্কর্য ও ফটোয় গান্ধী দর্শন প্রদর্শশালা। পাশেই গান্ধী স্মারক সংগ্রাহলয়। ব্যক্তি জীবনের নানা কিছু (বৃহঃস্পতি ছাড়া ৯.৩০ হইতে ৫টা ৩০ মিনিট) আর রবিবার ৪ টেয় হিন্দি, ৫টায় ইংরেজী ধারাভাষ্যে ফ্লিম শোয় সর্বদয় আন্দোলন দেখে নেওয়া যায়।

 

আর এক গন্ধী স্মারক গান্ধী বলিদান স্থান, শহরের ত্রিস জানুয়ারী মার্গে। ১৯৪৮ এর ৩০ জানুয়ারী ৫টা ৫ -এ বিড়লা ভবনের উপাসনা যাবার পথে আততায়ীর গুলিতে গান্ধাজির যেখানে শহিদ হন তারই স্মারক রুপে মিউজিয়াম হয়েছে বিড়লা ভবনে। পুতুলে ও ফ্লিমে গান্ধী চরিত দেখে নেওয়ার যায় (১০টা হইতে ৫টা)

 

শান্তিবনঃ
রাজঘাটের উত্তর লাগোয়া শান্তিবন। স্বাধীন ভারতের প্রথমে প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর শেষকৃত্য হয় এখানে ১৯৬৪র ২৭ শে মে। এখানেই গড়ে তোলা হয়েছে। সামাধি বেদী। পাশেই ১৯৮০ এর জুনে বিমান দূর্ঘটনায় নিহত নাতি ( ইন্দিরা তনয়) সঞ্জয় গান্ধীর স্মৃতি বেদী।

 

বিজয়ঘাটঃ
ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সামাধি বেদী। ১৯৬৫ এর ভারত পাক যুদ্ধ জয়ের পর শান্তি সম্মেলণ গিয়ে তাসখন্দে মৃত্যু লাল বাহাদুরে। ১৯৬৫ তে এখানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।


শক্তিস্থলঃ
ভারতীয় জাতীয় সংহতির অমলিন প্রতিমা প্রিয়দর্শিনির ইন্দিরার স্মৃতিতে আর এক জাতীয় মন্দির গড়ে উঠেছে রাজঘাট ও শান্তিবনের মাঝ। ৩১ শে অক্টোবর ১৯৮৪ শহীদের মৃত্যুবরণ করেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধী আর ৩রা নভেম্বর তার নশ্বর দেহ প্রতাগ্নিতে বিলীন হয় এই শান্তিভবনে। ধূসর লাল এক পাথরে মনোলিথিক স্মারক সৌধ হয়েছে।

বীরভূমিঃ
মায়ের কাছে তৈরী হয়েছে আর এক জাতীয় মন্দির। ইন্দিরা তনয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব স্মরনে । চেন্নাই থেকে ৪০ কিঃমিঃ দূরে শ্রী পেরামবুদুরে ২১ শে মে ১৯৯১ রাজ ১০টা ২০ মিনিটে ঘাতকের হাতে শহীদ হলেন বরেণ্য রাজীবগান্ধী। আর ২৪ শে মে প্রত্যগ্নিতে বিলীন হয় তার নশ্বর দেহ এই পূণ্য ভূমে। সেই সমঋতিতে জাতীয় বেদী।
পাশাপাশি গড়ে উঠেছে এই ৫টি বরনীয় স্মৃতি মন্দির। দিল্লী ভ্রমণার্থীদের কাছে এদের আর্কষন অনস্বীকার্য। লাগোয়া পার্ক বিশ্ববন্দিত নানা ভিআইপি রোপিত বৃক্ষরাজিও মাথা নত করে দাড়িয়ে । সান্ধ্য ভ্রমণের পক্ষেও পরিবেশ রমনীয়। আর হয়েছে কৃষক নেতা ভারতের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী চরন সিং-এর স্মরণে কিষাণ ঘাট- রাজঘাটের অদূরে যমুনা কিনারে মে ৩১ ১৯৮৭ তে এখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় চরন সিং-এর। আর হয়েছে রাজঘাটের বিপরীতে কিং রোডে যমুনা কিনারে দলিত নেতা ভারতে আর এক প্রধানমন্ত্রী বাবু জগজীবন রামের স্মারণে সমাধি মন্দির।

 

বুদ্ধজয়ন্তী পার্কঃ
করল বাগ হয়ে পালামগামী সর্দার প্যাটল মার্গে হাউসের বিপরীতে বৃদ্ধের নির্বাণ লাভের আড়াই হাজার বর্ষপূতি স্মারক রুপে গড়া সুন্দর বাগিচা বৃদ্ধজয়ন্তী পার্ক। এমনকি শ্রীলঙ্কা থেকে মূল রোধি বৃক্ষের একটি শাখা এনে প্রেথিত হয়েছে পার্ক। মনোহরা ফুলের সৌন্দর্য ভ্রমণার্থী ও স্থানীয় অবসর বিনোদন টেনে আনে শহর থেকে। চড়–ই ভাতির আদর্শ পরিবেশ।


হুমায়ুনের সমাধিঃ
পুরানো কিল্লার ২ কিমি দক্ষিনে মথুরা রোডে দ্বিতীয় মুগল স¤্রাট হুমায়ুনের সমাধিত মৃত্যুর ৯ বছর পর ১৫৬৪ থেকে ৭৩-এ হাজি (হামিদা) বেগম (আকবরের মা) ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪৩ মিটার উঁচু অষ্টকোণী সুরম্য সৌধ গড়ে। ৩৮ উঁচু পেয়াজধর্মী গম্বুজ হয়েছে শিরে। ধনুকাকৃতি খিলানের অলিন্দ হয়েছে ১২.২ মিটার উচু। পরবর্তীকালে হাজি বেগম ও সামাধিস্থ হন। ঢোয়ারায় সুশোভিত মনোরম মুগল উদ্যানচারবাগের মাঝে পারসীয় উদ্যানে ঢুকে ইষৎ লাল বেলে পাথরের সাথে বহু রঙ্গা মর্মরে গড়া এই সুন্দর সামাধি সৌধ মোহিত করে। খিলানের জাফরির কাজ ও সুন্দর। বয়স ও স্থাপত্যে তাজের পূর্বসূরী এটি। উত্তরকালে তাজ তথা নানান মোগল সৌধ তৈরীতে প্রেরণা জাহাঙ্গীর এই সমাধি। উঠতেই বায়ে দারাশিকো সুজা ও মুরাদের সমাধি। এমনকি পত্র ও নাতি সহ শেষ মোগল স¤্রাট বাহাদুর শাহ শায়িত রয়েছেন এখানে এছাড়া মদিনার অনুকরণে মসজিদও হয়েছে প্রাঙ্গুনে ঢুকতে ডাইনে। অদূরে নিজামউদ্দিন রেলস্টেশন। ট্যুরিষ্ট অফিস থেকে দুরুত্ব ৪.০৮ কিমি। সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা টিকিট ও লাগে দেখতে। শুক্রবার ফ্রি দর্শন।
হুমায়ুন টম্বের ৩কিমি দক্ষিণে মথুরা রোডের পশ্চিমে ১৯৬৩ আবিস্কৃত হয়েছে আশোক রক এডিষ্ট। স্বল্প দূরে ১৮ শতকের কানকাজি কালী মন্দির।


কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে বাস অথবা বিমান যোগে কলকাতা। কলকাতা থেকে বিমান অথবা ট্রেন যোগে দিল্লী। অথবা সরাসরি বিমান যোগে দিল্লী


কোথায় যাবেন :
দিল্লীতে পাহাড়গঞ্জসহ আপনার পছন্দমত যে কোন এলাকায় বিভিন্ন মূল্যমানের হোটেলে থাকা ও খাওয়াদাওয়া করতে পারেন।


যারা প্যাকেজের ব্যবস্থা করেন:
ঢাকা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস, মোবা: ০১৯৭৮৮৮২২২৩, মাহিমা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস লি:, মোবা: ০১৯৭৩১৭৩৩৬, ক্লাসিক ট্রুরস এন্ড ট্রাবেলস, মোবা : ০১৭১৫৮১৭৯৯৪, ইস্টার্ন ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস, মোবা : ০১৭১১১০২১৩৮ সহ অসংখ্য ট্রাভেল কোম্পানি।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক মানবাধিকার খবর