শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য   * ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দুর্গম সীমান্তে বিজিবি মহাপরিচালক   * টানা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখ লাখ পর্যটক, হোটেলে কক্ষ না পেয়ে ভোগান্তি  

   সারাদেশ
মানবতার নবী মুহাম্মাদ (সা:); বিশ্ব জগতের রহমত মাওলানা মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক আদ্দাঈ
  Date : 06-12-2016


হযরত  মুহাম্মাদ (সা:) পৃথিবীর ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম। পূর্বের সকল ধর্ম গ্রšেদ বর্ণিত হয়েছে যার আগমনের পয়গাম। যার আগমনে দিশা পেয়েছিলো থেমেছিলো মজলুমের কান্না। যিনি  ম্লান করেছিলেন যুগযুগান্তরের সকল অবমাননা। তিনি জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমগ্ন ঘুনে ধরা বর্বর সমাজ সভ্যতাকে সম্পূর্ণরূপে পাল্টে বিশ্বের দরবারে উপ¯দাপন করেছিলেন শান্তিময় আলোকিত নতুন সভ্যতা।

ইনজিলে পবিত্র আত্মা মুন হামান্না অথর্বে অবতার,
যযুর্বেদে ‘আল্লা রসূল মুহম্মদ রকং বরস্য’ সকল দেবতার।
ত্রিপীটকে গৌতম বুদ্ধের বাণী তিনি হবেন বৌদ্ধমৈত্রেয়,
বিশ্ব নন্দিত অধিক পারদর্শী  সে কথাও সহজে অনুমেয়।

আব্দুল্লাহর পৃষ্ঠ হতে মা আমেনার সেকামতে আরবের মক্কা নগরীতে ৫৭০ খৃষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মতান্তরে ৯ রবিউল আউয়াল নবী (সা:) জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর আগমন প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ হে নবী, আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী , সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে।”
(সূরা আহযাব:৪৫)
নবী (সা:) নিজেই বলেছেন, ‘বুইসতু মুয়াল্লিমান’- আমি শিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছি। অন্যত্র বলেন, ও যধাব নববহ ংবহঃ ড়হ বধৎঃয ঃড় বহংঁৎব ঃযব ঃড়ঢ় ঢ়ঁৎরভরপধঃরড়হ ড়ভ সড়ৎধষ বীপবষষবহপব ধহফ যঁসধহ নবরহম."
নবী (স:) জন্মের পূর্বে হারিয়েছিলেন পিতাকে, অত:পর ছয় বছর বয়সে মাতাকে। কালক্রমে তিনি যৌবনে পদার্পন করলেন আর তাঁর আদর্শিকতায় মুগ্ধ হলো মক্কার আপামর জনতা। ফলে তিনি শুধু প্রসংশিত জন বলেই বিবেচিত হননি বরং আল-আমীন বা পরম বিশ্বস্ত উপাধি লাভ করেন। অশ্লীলতা, মারামারি ,সংঘাতে নিমগ্ন মক্কার মানুষকে শান্তি দেয়ার নিমিত্তে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন হিলফ-উল-ফুযুল। কিšদ কোথায় শান্তি ? এর মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ শান্তি এলো না। তাই বয়স যখন পয়ত্রিশ এর উর্ধ্বে তখন ধ্যানে মগ্ন হলেন হীরা পর্বতের গুহায়। ৪০ বছর বয়সে লাভ করলেন নবুওয়াতের মুকুট। শুরু হলো দ্বীনের প্রচার। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করলেন “ইয়া আইয়ুহার রসূলু বাল্লিগ মা উনঝিলা ইলাইকা মির রব্বিক”-হে রাসূল (স:) আপনি প্রচার করুন যা আপনার রবের প থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। (সূরা আল-মায়েদা: ৬৭)
তিনি মানুষকে শিা দিতে লাগলেন মহান আল্লাহর বাণী তথা সত্যের অপার মহিমা, ন্যায় পরায়নতা, আমানতদারিতা এবং দুনিয়া-আখিরাতে সফলতার পরিপূর্ণ জ্ঞান। কিšদ অবিশ্বাসীদের বাধায় তাঁর এ মহান প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে লাগলো। এমনকি শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করলেন সাথীদের কয়েক জন। জুলুম-নির্যাতন বেড়েই চললো। অপর দিকে সকল বাধার প্রাচীর মাড়িয়ে গুটি গুটি পায়ে কিছু সত্যান্বেষী মানুষ দ্বীনের পতাকাতলে সামিল হচ্ছিলেন। জুলুম নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন চরম পর্যায়ে পৌঁঁছে গেল। অবিশ্বাসীরা উটের নাড়ি-ভুড়ি ফেললো খাবারে, কাটা পুতলো নবীজীর চলাচলের রাস্তায়, তায়েফ ভূমিতে শিকার হলেন সীমাহীন লাঞ্ছনা আর নির্যাতনের। এমনকি দারুন নদওয়ার বৈঠকে নবী (স:)কে হত্যার ভয়াল সিদ্ধান্ত হলো। ঠিক এমন অব¯দায় আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে ৬২২ খৃষ্টাব্দে নবী (স:) প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে পাড়ি জমালেন মদীনার পথে। বিদায় লগ্নে তিনি মাতৃভূমির দিকে বার বার তাকান আর কাতর কণ্ঠে বলেন ,
“হে আমার স্বদেশ,তুমি কত সুন্দর !
আমি তোমাকে ভালবাসি।
আমার স্বজাতি যদি ষড়যন্ত্র না করতো
আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।”
মদীনার সকল শ্রেণীর লোক নবীজীকে জানায় সাদর সম্ভাষণ। দীর্ঘ দিন ধরে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একজন যোগ্য ব্যক্তি খুঁজতে থাকা মদীনাবাসী আর দেরি করে নাই  নবী (স:) কে রাষ্ট্রপতির আসনে বসাতে। রাষ্ট্রীয় মতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি গোটা রাষ্ট্র ব্যব¯দাকে ইসলামের আলোকে ঢেলে সাজালেন। ন্যায় বিচারের মানদ-ে সাজালেন সমাজ ব্যব¯দা। জন্ম নিল একটি ুদ্র ইসলামী রাষ্ট্র। যার ভিত্তি কুরআন-সুন্নাহর আলোকে রচিত পৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান “ মদীনা সনদ”।
কিšদ এখানে এসেও নবী(স:) স¯িদতে থাকতে পারলেন না। অভ্যাহত ছিল মক্কার কাফির আর মদীনার মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র। ফলে সংঘটিত হলো বদর, ওহুদ, খন্দক সহ নানা রকম যুদ্ধ। ওহুদের রণাঙ্গনে শত্রুদের নিক্ষিপ্ত তীরে দন্ত মুবারক শহীদ হলেন, লোহার টুপি ভেঙে ঢুকে গেল মাথার মধ্যে। বেহুশ হয়ে গর্তের মধ্যে পড়ে গেলেন। নবী(স:) ২৭টি যুদ্ধে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তবে সরাসরি তরবারি দিয়ে কোন শত্রুকে আঘাত করেছেন এমন দৃষ্টান্ত  খুঁজে পাওয়া দূরহ ব্যাপার। ৬২৮ খৃষ্টাব্দে স্বারিত হয় হুদায়বিয়ার সন্ধি যা পবিত্র কুরআনে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা মহা বিজয় বলে চিহ্নিত। অত:পর আল্লাহর অপার করুণায় ৬৩০ খৃষ্টাব্দে অষ্টম হিজরী সনে বিজিত হয় মক্কা। যে মক্কাবাসীর নির্মম নির্যাতনে বাধ্য হয়েছিলেন নিজ গৃহ ছাড়তে, বিজয়ের এই দিনে ক্ষমা করেদিলেন তাদেরকে। ক্ষমার মহান দৃষ্টান্ত দেখে বিগলিত হলো অবিশ্বাসী শত্রুদের হৃদয়। শত্রুতা নয়,  বিদ্বেষ নয় বরং অতীতের ভেদাভেদ ভুলে আলিঙ্গণ করে নিলেন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে।  সাধারণ মানুষ দলে দলে জমায়েত হতে লাগলো ইসলামের ছায়াতলে। মহান আল্লাহর বাণী,“যখন আল্লাহর সাহায্য এসে যায় এবং বিজয় লাভ হয়, হে রাসূল আপনি তখন দেখবেন, লোকেরা দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে। (সূরা-নসর:১-২)
ুদ্র রাষ্ট্র পরিনত হলো একটি বৃহত্তর রাষ্ট্রে। নবী (স:) ৬৩২ খৃষ্টাব্দ, দশম হিজরী সনে বিদায় হজ্বের ভাষণ দিলেন। ৪৭ দফার দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি তুলে ধরলেন মানুষের অধিকার ও কর্তব্যের কথা। উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী  মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে দাবি আমরা শুনতে পাই, কুরআন-সুন্ন্াহ আর ইতিহাস ঘাটলে চৌদ্দশত বছর পূর্বে নবী (স:) এর জীবদ্দশাতে সেগুলোরই বাস্তবায়িত রূপ দেখতে পাব। মানবতার কল্যাণে ঐতিহাসিক মদীনা সনদ এবং বিদায় হজ্বের ভাষণ অপেক্ষা উৎকৃষ্ট নজির আর কী হতে পারে?  তা ছাড়াও তিনি  রেখে গেলেন পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ- আমাদের জীবন চলার পাথেয়, মানব মুক্তির মহা স্মারক। হযরত আনাস (রা:) বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, নবী (স) বলেন, আমি তোমাদের নিকট রেখে যাচ্ছি দ’ুটি নির্দেশনামা। তোমরা কখনো পথহারা হবেনা যদি এ দু’টিকে আকড়ে ধরতে পার। এক- আল্লাহর কিতাব আর দুই-রসলুূল্লাহর  রীতি-পদ্ধতি।” ( মুয়াত্তা)
তাঁর ৬৩ বছরের দীর্ঘ জীবনে ছিলোনা কোন ব্যর্থতার পরিচয় বরং তিনি ছিলেন সকল েেত্র পরিপূর্ণ সফল। ব¯দত ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সফলতার বিচারে তাঁর সাথে কারও তুলোনা হতেই পারে না। তাইতো খ্রিষ্টান পন্ডিত মাইকেল এইচ. হার্ট  “ঞযব ১০০, অ ৎধহশরহম ড়ভ ঃযব সড়ংঃ রহভষঁবহঃরধষ চবৎংড়হং রহ ঃযব ঐরংঃড়ৎু ’ বইয়ে ঘোষণা  করেছেন, “গঁযধসসধফ ড়হষু ঃযব সধহ রহ ঃযব যরংঃড়ৎু যিড় ধিং ংঁঢ়ৎবসবষু ংঁপপবংংভঁষ ড়হ নড়ঃয ৎবষরমরড়ঁং ধহফ ংবপঁষধৎ ষবাবষং.”
পৃথিবীর ইতিহাসে মোহাম্মাদ (স:)ই একমাত্র মানব যিনি ধর্মীয় এবং  বৈষয়িক উভয় দিক থেকে পূর্ণাঙ্গ সফলকাম ছিলেন।”
নবী করিম (স:)এর  আগমনে আল্লাহর রহমতের ধারা প্রবাহিত হয়েছিলো সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে। তাইতো তার বক্তব্য-বিবৃতি আর কর্মের মাঝে বারবার দৃশ্যমান হয়েছে সৃষ্টিজগতের প্রতি কর্তব্যবোধ। মানুষ, জীব-জংšদ, উদ্ভিদ; ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র; ইহকাল-পরকাল সব বিষয়ে রয়েছে তাঁর সুস্পষ্ট নির্দেশনা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে ,“হে রাসূল, আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।” (সূরা আল আম্বিয়া:১০৭)
আরও বলা হয়েছে, “তোমাদের জন্য রাসূল (স:) এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।” (সূরা আহযাব:২১)
 সুতরাং বিশ্বব্যাপী  মানবতার এ ক্রান্তিলগ্নে  রহমতের নবী  মুহাম্মাদ (স:) এর দেখানো পথের অনুসরণই মানব মুক্তির পথ। নোবেল বিজয়ী জর্জ বার্নাডশের ভাষায়, ও নবষরাব ঃযধঃ, রভ ধ সধহ ষরশব যরস বিৎব ঃড় ধংংঁসব ঃযব ফরপঃধঃড়ৎংযরঢ় ড়ভ ঃযব সড়ফবৎহ ড়িৎষফ যব ড়িঁষফ ংঁপপববফ রহ ংড়ষারহম রঃং ঢ়ৎড়নষবসং রহ ধ ধিু ঃযধঃ ড়িঁষফ নবরহম রঃ ঃযব সঁপয হববফবফ ঢ়বধপব ধহফ যধঢ়ঢ়রহবংং.
লেখক: ধর্মীয় গবেষক, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোচক ও সহকারী সম্পাদক,
মানবাধিকার খবর।



  
  সর্বশেষ
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি
দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন
আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308