শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক   * কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান   * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য  

   রাজনীতি
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বিশিষ্টজনদের বক্তব্য সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের আন্দোলনে সবাইকে যুক্ত হতে হবে -সুলতানা কামাল
  Date : 01-09-2016

নিজস্ব প্রতিবেদক :

 

শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে সুন্দরবন বাঁচাতে হবে সুন্দরবন রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক তত্তাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মানবাধিকার নেতা সুলতানা কামাল। আর এ জন্য রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের আন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

১৯ আগস্ট রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত ‘রামপালে কী হচ্ছে? উন্নয়ন, পরিবেশ ও গণতন্ত্রের প্রশ্ন’ শীর্ষক প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা সভায় সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র আয়োজিত এই সভায় রামপাল প্রকল্পের কারিগরি, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

এসময় সুলতানা কামাল বলেন, মাত্র কয়েক বছর আগে হাতিরঝিল প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধের কারণে নাকে কাপড় দিতে হয়েছে। রামপাল প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের চারপাশে ক্ষমতাবানেরা জমি কিনে শিল্প প্লট তৈরি করছেন। ফলে সুন্দরবনের দিকে এখন সব মুনাফাখোর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সুলতানা কামাল আরও বলেন, তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে রামপাল প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে।

সভায় তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল প্রকল্পটি যে কোম্পানি তৈরি করছে, তার নাম রাখা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী কোম্পানি। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজ যতই এগোচ্ছে, ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের তত বেশি বৈরিতা বাড়ছে। কারণ, রামপাল প্রকল্পের সব অবকাঠামো ও নির্মাণকাজ ভারতীয় কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে। আর এ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি ভারতের পরিবেশবিদেরাও স্বীকার করে নিয়েছেন। ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বের সম্ভাবনা রয়েছে, তা নষ্ট হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘আমরা রামপাল প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতির বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেছি। কিন্তু তারা এসব তথ্য ও যুক্তির দিকে না গিয়ে “রামপালের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না” বলতে থাকেন। এসব আচরণ দেখে মনে হয় তারা অন্য কোথা থেকে এসব কুযুক্তি শুনে তা আওড়াচ্ছেন।’

পরিবেশবাদী সংগঠন প্রতিবেশ আন্দোলনের সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, সরকার থেকে বলা হচ্ছে, রামপাল প্রকল্প সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু প্রকল্পের পাশেই পশুর নদ। সেখানে রামপাল প্রকল্পের দূষিত পানি ও পদার্থ ফেলা হবে, যা এই নদ দিয়ে সুন্দরবনের ভেতরে প্রবেশ করে এর পুরো প্রাণ ও খাদ্যচক্র দূষিত করবে।

প্রকল্পের কারিগরি ও সম্ভাব্য প্রভাবের দিক উপস্থাপন করে প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, রামপাল প্রকল্পে বছরে ৪৭ লাখ টন কয়লা পোড়ানো হবে। এতে প্রায় ১০ লাখ টন ছাই তৈরি হবে। এই ছাইয়ের পাশাপাশি পোড়ানো কয়লা থেকে বিপুল পরিমাণ সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও পারদ নির্গত হবে। প্রকল্প থেকে বলা হচ্ছে, এসব বিষাক্ত পদার্থ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে ১৮৮টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা বায়ু দূষণমুক্ত করতে গিয়ে পানি দূষিত করছে।

বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক অরূপ রাহির সঞ্চালনায় আলোচকেরা রামপাল প্রকল্প নিয়ে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে ৩ মাসেই সুন্দরবন ধ্বংস হবে -আনু মোহাম্মদ

 

 

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে ‘সুন্দরবন ধ্বংস হতে তিন মাসই যথেষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদ। ২৬ আগস্ট সাতক্ষীরা জেলা পুরাতন আইনজীবী ভবন মিলনায়তনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সাতক্ষীরা শাখা সুধী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি বক্তৃতা কালে এ মন্তব্য করেন।

আনু মোহাম্মদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। বিশ্ব ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সুন্দরবন ধ্বংস হলে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সব মানুষের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হবে।

যেকোনো ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট’ করতে হয়। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে তা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন আনু মোহাম্মদ।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নে শুরু থেকে অনিয়ম করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, রামপালের জমি অধিগ্রহণে কিছু ধনী প্রভাবশালী লাভবান হয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা জমি দিতে চায়নি তাদের ক্রস ফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

“রামপালে সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবন ধ্বংস করতে তিন মাসই যথেষ্ট।” যদি কোনো দুর্ঘটনা নাও ঘটে তারপরও সুন্দরবন ধ্বংস হবে।

তিনি বলেন, সরকার বারবার বলছে বাতাস বনের দিকে যাবে না, কিন্তু এটি মিথ্যাচার। কোম্পানির সাথে যুক্ত লোকজন ছাড়া দেশের বেশিরভাগ মানুষ এর পক্ষে নয়।

আনু মোহাম্মদ বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবনের ভারতের অংশও ধ্বংস হবে বলে ভারতের সচেতন মানুষরাও এ প্রকল্পের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। তাই দুই দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকম-লীর সদস্য আজিজুর রহমান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা দেওয়ান আব্দুর রশিদ নীলু ও জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

 

প্রাকৃতিক দূর্যোগে সুন্দরবন আমাদের মায়ের মত আগলে রাখে -ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম

 

সেভ দি সুন্দরবন ফাউন্ডেশন  চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৭ আগস্ট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ স্থাপনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে যে যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন তা আমাদের হতাশ করেছে। আমরা পরিস্কারভাবে জানাতে চাই যে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য যত যুক্তি-প্রযুক্তি বা ব্যবস্থাপনার কথা বলা হোক না কেন, সুপার সাইক্লোন বা জলোচ্ছ্বাসের কাছে সবকিছুই ব্যর্থ। জলবাযু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম ঝুকিপূর্ণ দেশ। ১৮৮১-১৯৯০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে ঘূর্নিঝড়ের আঘাতে যত মানুষ মারা গেছে তার ৪৯% বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড়ে ১৯৭০ সালের প্রায় ৫ লাখ এবং ও ১৯৯১ সালে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায়।

২০১৩ সালের ১৯ জুন বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০০৭ সালে ভয়াবহ সিডরের আঘাতে প্রায় ৩৫৫ লাাখ বাড়িঘরে পানি উঠে গিয়েছিল। ২০৫০  সালের  মধ্যে কমপক্ষে ৫০টি ভয়াবহ ঝড় হতে পারে এবং ৯৭ লাখ মানুষের বাড়িঘর ও কৃষিজমি তিন মিটারের বেশী পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।

প্রাকৃতিক দূর্যোগে সুন্দরবন আমাদের মায়ের মত আগলে রাখে। সিডর বা আইলার মত ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস হলে পশুর নদীর জোয়ার ভাটার ¯্রােতে হাজার হাজার টন ছাই বা কয়লার বর্জ্য সুন্দরবনসহ উপকূলের সব জনপদে ছড়িয়ে পড়বে। দেশকে নিরাপদ বাসযোগ্য করার জন্য উপকূলের এ ধরনের সংকটাপন্ন এলাকায় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অযৌক্তিক এবং অনৈতিক। দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন কখনো মানুষকে হুমকির মুখে ফেলে হতে পারে না। সবার সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। তাই জনস্বার্থে অবিলম্বে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ বাতিল বা সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।



  
  সর্বশেষ
খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক
কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308